বাতাসে বেলুনটি পথ ভুল করেছে দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বেলুনটি নিজের গতিপথে ওড়ার ক্ষমতা সীমিত। এ অবস্থায় এতে অপ্রত্যাশিত বাতাস লাগে। এতে বেলুনটির গতিপথ পরিবর্তন হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় চলে যাওয়ার ঘটনা অপ্রত্যাশিত।’
এর আগে পেন্টাগনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তবে বেলুনটি যেসব এলাকার ওপর দিয়ে উড়ছিল, সেখানে বসবাসরত মানুষের ক্ষতি বিবেচনায় তা করা হয়নি।
চীনা বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আকাশে দেখা গেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর বিমানঘাঁটি, ভূগর্ভস্থ কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্রকেন্দ্র রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, স্পষ্টত, এ বেলুনের উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকাগুলোর ওপর নজরদারি করা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের বেলুন শনাক্ত করার এ ঘটনাকে ‘বিপজ্জনক গোয়েন্দা–হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করতে নারাজ পেন্টাগন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এর আগে বলেছিলেন, ‘শনাক্ত হওয়া চীনা গোয়েন্দা বেলুনটি কয়েক দিন আগে মার্কিন আকাশসীমায় ঢোকে। আমাদের গোয়েন্দারা এটি শনাক্ত করতে সক্ষম হন। তবে বেলুনটি খুব বেশি গোয়েন্দা–তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় মনটানার আকাশে অবস্থান করার সময় বেলুনটি শনাক্ত করেন পেন্টাগনের কর্মকর্তারা। এরপর বাইডেনের নির্দেশে লয়েড অস্টিন গত বুধবার পেন্টাগনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেলুনটি ভূপাতিত করার বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এ সময় অস্টিন ফিলিপাইন সফর করছিলেন।
পরে বেলুনটির সর্বশেষ গতিবিধি ও কার্যক্রম যাচাই করতে যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, চীনা বেলুনটি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে পেন্টাগন। এটির ধ্বংসাবশেষের আঘাত থেকে ভূমিতে থাকা মানুষদের রক্ষা করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর বেলুনটি অনেক ওপর দিয়ে উড়ছে। তাই বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর স্থগিত
এদিকে ‘বেলুনকাণ্ডে’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের চীন সফর স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দ্প্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে চীনে যুক্তরাষ্ট্র–চীনের মধ্যে এটি প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হতে পারত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এ বৈঠকের অনুকূলে নেই বলে সফর বাতিল হয়েছে।
আগামী ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি দুই দিনের সফরে চীনে যাওয়ার কথা ছিল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকের এবারের সফরে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, তাইওয়ান ও করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় চীনা নজরদারি বেলুন নিয়ে বেইজিংয়ের কাছ থেকে খোলাখুলি ব্যাখ্যা না পাওয়ায় সফর স্থগিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরামর্শে সফর স্থগিত করার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্লিঙ্কেন।