
বাংলাদেশে গণমাধ্যম এখন বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁর মতে, সে কারণে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র গণমাধ্যমে আসছে না।
জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার এক গোলটেবিল বৈঠকে এই মত জানান প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, ‘যেহেতু পত্রিকাগুলোতে অনেক কিছু…খুব বড় রকমের একটা ফ্রিডম উনারা পেয়েছেন। ফলে অনেক ধরনের কথা বলেন।’
শফিকুল আলম মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে চিত্র গণমাধ্যমে দেখা যায়, বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক ভালো।
ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সপ্রাণ আয়োজিত এই গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধিকার সংগঠনটির গবেষক অপ্সরা ইসলাম। ‘আফটার দ্য মুনসুন আপরাইজিং: রিভিউয়িং বাংলাদেশ’স হিউম্যান রাইটস ল্যান্ডস্কেপ ইন দ্য ট্রানজিশনাল পিরিয়ড’ শীর্ষক এই প্রবন্ধে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের পর মব-সন্ত্রাস, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, সীমান্ত সংঘাত এবং ধর্মীয় সংঘাত বেড়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, খুন এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু কমেছে।
প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত সময়ে দেশে ৪৯৬ জন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এই সময়ে দেশে খুনের ঘটনা ঘটে ২ হাজার ৮৭৮টি, মব-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে ১৯৫টি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩৫টি, শিশুর ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ৬৪০টি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৩৫টি। এ ছাড়া সীমান্তে ৩৪টি হত্যাকাণ্ড এবং ভারত থেকে ২ হাজারের বেশি পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে।
মূলধারার গণমাধ্যমগুলো থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে গোলটেবিল বৈঠকে জানানো হয়।
গণমাধ্যম থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকতা থেকে প্রেস সচিবের দায়িত্বে আসা শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিবেদনের একটা বড় সমস্যা হলো, পত্রিকাগুলোর রিপোর্টের ওপর নির্ভর করা।
যেসব সংবাদপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, তার সত্যতা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শফিকুল আলম বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশের পত্রিকাগুলো বছরের পর বছর পর মিথ্যা তথ্য দিয়ে গেছে।
জুলাই অভ্যুত্থান নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমের যে প্রত্যাশা তৈরি করেছিল, তা এখনো পূরণ হয়নি বলে খেদ প্রকাশও করেন শফিকুল আলম।