সংসদ নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হচ্ছে; তবে তা সাজানো ও অনেকটা আত্মঘাতীমূলক প্রতিযোগিতা। এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। একে মূলত একটি বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা বলা যায়।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা উঠে আসে। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম শনিবার সকালে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলনে করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ হচ্ছে; তবে তা সাজানো ও অনেকটা আত্মঘাতীমূলক প্রতিযোগিতা। স্বেচ্ছায় হোক বা হুমকি ও জোরপূর্বক ভোটার নিয়ে আসা হোক; ভোটার অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে। সাংবিধানিকভাবেও শুদ্ধ বলা যাবে, তাই আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। তবে এটি আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সম্ভাব্য সব দল বা প্রার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি, এটা তো পরিষ্কার। তার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র তৈরি করা হয়নি। এতে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। এসব পরিপ্রেক্ষিতে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়। যারা এমন একচ্ছত্র ভুবন তৈরি করছেন, তারাও জানেন, এতে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ ঘটে। এটা কেউ চায় না। এটা সব নাগরিকের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দায়ও সবার নিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হলফনামা থেকে প্রার্থীর আয় ও সম্পদ সম্পর্কে জানার একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দেশবাসী জানতে পারছে, তুলনা করার সুযোগ পাচ্ছে। বাস্তবে যদি ক্ষমতা যথাযথ প্রয়োগে ইসির সৎ সাহস থাকত, তাহলে তথ্য গোপন করার অভিযোগে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হতো। তা তো হচ্ছে না। তবে দুদক চাইলে স্বপ্রণোদিত হয়ে সম্পদের উৎস তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এটাকে নির্বাচন বলা যাবে না। এটি মূলত একটি বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা। ১৯৮৮ ও ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি) সালেও এমন নির্বাচনে দেখা গেছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, নাগরিক সমাজের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন, সেখানে একটা ঘাটতি আছে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী বলেন, আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে নজরদারি ও জবাবদিহি থাকতে হবে। না হলে আইন থাকবে, বাস্তবায়ন হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, এশিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ প্রমুখ।