নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে চায় ১৯৯ সংস্থা

0
106
নির্বাচন

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে দেশের ১৯৯টি বেসরকারি সংস্থা। যে সংস্থাগুলো স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে ইসির নিবন্ধন পাবে, তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাবে। এই নিবন্ধনের মেয়াদ হবে আগামী পাঁচ বছর।

ইসি সূত্র জানায়, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত সময় ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১৯৯টি সংস্থা আবেদন করেছে। এখন ইসির গঠন করা সাত সদস্যের একটি কমিটি আবেদনগুলো প্রাথমিকভাবে যাচাই–বাছাই করছে। সে কাজ অনেকটা শেষ পর্যায়ে। প্রাথমিক বাছাইয়ে মোট আবেদনের অর্ধেক বাদ পড়ার সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর দাবি বা আপত্তি জানানোর জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। এরপর শুনানি শেষে কমিশন নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে। নিবন্ধন পাওয়া সংস্থাগুলো জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে হয়। ইসির নিবন্ধন না থাকলে কোনো দেশি সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায় না।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি যে কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, সেখানে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের কাজ চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে ইসিতে মোট ১১৮টি সংস্থা নিবন্ধিত আছে। আগামী ১১ জুলাই এসব সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হবে। এবার নিবন্ধনের জন্য যেসব সংস্থা আবেদন করেছে, তার মধ্যে ৪০টি সংস্থা এখন নিবন্ধিত। যারা নিবন্ধিত হয়েও গত পাঁচ বছরে কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেনি, তাদের আবেদন বাতিল হবে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য যেসব আবেদন পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই–বাছাইয়ের কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

ইসি সূত্র জানায়, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে যেসব সংস্থা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই জেলা পর্যায়ের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে, সেগুলোর মধ্যে আছে পর্যবেক্ষক সংস্থাকে দেশের কোনো আইনের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে, সংস্থাকে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হতে হবে। নিবন্ধিত রজানৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন বা আছেন বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, এমন কোনো ব্যক্তি কোনো সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদে বা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হয়ে থাকলে ওই সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের পদ্ধতি চালু করা হয়। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে সংযোজন করা হয় এবং ইসি একটি স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা তৈরি করে। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ১৩৮টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছিল ইসি। এর মধ্যে ৭৫টি সংস্থার ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন পর্যবেক্ষক নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তবে এর আগেও দেশি–বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেতেন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় ৬৯টি সংস্থার ২ লাখ ১৮ হাজার পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। আর সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ছিল ৮১টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পর্যবেক্ষকেরা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের চোখ–কান হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা ইসির সহায়ক শক্তি। তাই এমন স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিতে হবে, যারা নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করবে। পক্ষপাতদুষ্ট কোনো সংগঠনকে যেন নিবন্ধন দেওয়া না হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.