নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চান রুক্মিণী

0
6
রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দুনিয়ায় তিনি পরিচিত মুখ। কিন্তু ‘কানতারা: আ লেজেন্ড-চ্যাপ্টার ১’-এর পর এখন সারা ভারতেই আলোচনায় রুক্মিণী বসন্ত, এমনকি আন্তর্জাতিক পরিসরেও তাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে। রাজকন্যা কঙ্কাবতীর চরিত্রে তাঁর উপস্থিতি দর্শকের নজর কেড়েছে। কয়েক বছর আগেও আঞ্চলিক ছবির ভেতরে সীমিত ছিল যাঁর পরিচিতি, তিনিই আজ হয়ে উঠেছেন সিনেমাপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু। সম্প্রতি দৈনিক অমর উজালাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুক্মিণী জানিয়েছেন এই ছবিকে ঘিরে নিজের অভিজ্ঞতা।

২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া কন্নড় ছবি ‘কানতারা’ সারা ভারতে দারুণ সফল হয়েছিল। সেই ছবির নায়ক, পরিচালক ও লেখক ঋষভ শেট্টি রাতারাতি হয়ে উঠেছিলেন সর্বভারতীয় তারকা। তাই এর প্রিকুয়েল ‘কানতারা: আ লেজেন্ড–চ্যাপ্টার ১’ নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। রুক্মিণী এই ফ্র্যাঞ্চাইজির একেবারেই নতুন সদস্য।

রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে
রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

তাই কোনো চাপ অনুভব করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, ‘নিশ্চয়। প্রথমটা সফল হলে দ্বিতীয় ভাগে দায়িত্ব বেড়ে যায়। তবে আমাদের টিম খুবই আন্তরিক ছিল। চাপ অনেক সময় আমাদের আটকে দেয়, কিন্তু দায়িত্ব সব সময় প্রেরণা জোগায়। এই ছবির টিম দায়িত্বকে প্রেরণায় পরিণত করেছে। তাই কাজকে কখনোই বোঝা মনে হয়নি। আমরা আমাদের সেরাটা উজাড় করে দিতে পেরেছি। সবার সহযোগিতার কারণেই এটা হয়েছে।’

স্বপ্নপূরণ
‘কানতারা: আ লেজেন্ড–চ্যাপ্টার ১’–এর অংশ হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত রুক্মিণী। তিনি বলেন, ‘ঋষভ স্যার আমার প্রথম ছবি ‘সপত সগরদাচে এলো’ দেখে আমাকে প্রশংসা করেছিলেন। তাঁর মুখে প্রশংসাসূচক শব্দ শোনা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কখনো ভাবিনি, সেই ছবির কারণে এত বড় প্রজেক্টে সুযোগ পাব। আমাকে যখন তিনি এই ছবির প্রস্তাব দেন, তখন একেবারেই স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল। চরিত্রটা যেমন বড়, কাহিনিতেও এর গুরুত্ব অনেক। শুরুতে অবশ্য একটু ভীত ছিলাম। কিন্তু ঋষভ স্যারের ভরসা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল।’

রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে
রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

ছবিতে রাজকন্যা কঙ্কাবতীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুক্মিণী। এই চরিত্রে ঢোকার জন্য তাঁর ছিল দীর্ঘ প্রস্তুতি। তিনি বলেন, ‘এমন একটা ছবিতে কাজ করার সময় করাবলি সংস্কৃতির মধ্যে পুরোপুরি নিমজ্জিত হওয়াটা জরুরি। কারণ, কানতারা শুধু কাহিনি নয়, করাবলি অঞ্চলের পরম্পরা ও বিশ্বাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমার চরিত্রের কারণে ভূতপ্রেত ও দেব–দেবীর পূজা সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে হয়েছে। লেখক ও ঋষভ স্যার এ ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করেছেন। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, শারীরিক ভাষা আয়ত্ত করা। কঙ্কাবতীকে সঠিকভাবে জীবন্ত করে তুলতে তা শেখা জরুরি ছিল।’

নতুন চ্যালেঞ্জ
সামনে রুক্মিণীকে ‘টক্সিক’ ছবিতে দেখা যাবে। নিজের সাম্প্রতিক ভ্রমণ ও যাত্রাকে তিনি বলেন স্পেশাল। তাঁর ভাষায়, ‘গত অক্টোবর থেকে আমি যেসব ছবিতে কাজ করেছি, সেগুলো একেবারেই ভিন্ন ধারার। এই ভ্রমণে ক্রমাগত নিজেকে আমি চ্যালেঞ্জ করেছি। এর মধ্যে দুটো জিনিস শিখেছি—আমার শক্তি ও দুর্বলতা চিনেছি এবং নিজেকে ক্রমান্বয়ে উন্নত করে চলেছি।’

রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে
রুক্মিণী বসন্ত। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

রুক্মিণীর কাছে প্রতিটি চরিত্র মানে নতুন এক যাত্রা, নতুন এক চ্যালেঞ্জ। ‘কানতারা: আ লেজেন্ড–চ্যাপ্টার ১’ তাঁকে শুধু বড় ক্যানভাসেই তুলে আনেনি, বরং নিজের ভেতরের সম্ভাবনাকেও নতুনভাবে চিনতে শিখিয়েছে। দায়িত্বকে তিনি বোঝা নয়, প্রেরণা হিসেবে দেখেন। আর এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে আলাদা করে তুলছে। সামনে আরও নানা চরিত্রে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কারের প্রত্যাশা নিয়ে এগোচ্ছেন তিনি। নিজেকে বারবার ছাড়িয়ে যেতে চান এই অভিনেত্রী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.