স্মৃতি আক্তারের জন্য আজকের দিনটাকে একটু বিশেষই বলতে হয়। লাল-সবুজ জার্সিতে প্রথমবার নারী বিশ্বকাপ কাবাডি খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই ম্যাচসেরা! মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলও নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৪২-২২ পয়েন্টে উগান্ডাকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শুরু করেছে জয় দিয়ে।
আজ বিকেলে ইনডোর স্টেডিয়ামের সব আলো যেন একাই কেড়ে নেন স্মৃতি। উগান্ডার একের পর এক রেইডারকে আটকে নজর কেড়েছেন রাজশাহীর মেয়ে। গ্যালারি থেকে তাঁর জন্য গলা ফাটিয়েছেন সমর্থকেরাও৷ ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই সেরার পুরস্কারও উঠেছে স্মৃতির হাতে।
২০০৯ সালে প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে কাবাডিতে নাম লেখান স্মৃতি। তার আগপর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে খেলেছেন জুডো। তাঁর সঙ্গে তখন বড় বোন নাসরিন আক্তারও কাবাডি খেলা শুরু করেন। পরে নাসরিন খেলা ছেড়ে দিলেও স্মৃতি খেলা চালিয়ে যান। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০১৬ সালে জাতীয় দলে ডাক পান। সে বছরই এসএ গেমসে বাংলাদেশের ব্রোঞ্জজয়ী দলে ছিলেন স্মৃতি।

এবার লক্ষ্য কাবাডি বিশ্বকাপেও পদক জেতা। শুরুটা জয় দিয়ে হওয়ায় আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বেড়ে গেছে স্মৃতির, ‘অনেক ভালো লাগছে, জয় পেয়েছি। চেষ্টা করব পরের ম্যাচগুলোও জিততে। এটা আমার প্রথম বিশ্বকাপ। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেই বেশি খুশি। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব বাংলাদেশকে পদক এনে দিতে।’
কোর্টের লড়াইয়ে অবশ্য ছেড়ে কথা বলেনি উগান্ডাও। প্রথমার্ধে ভালোই লড়াই করেছে দলটি। প্রথম দিকে বাংলাদেশের মেয়েদের কিছুটা রক্ষণাত্মক মনে হয়েছে, যার প্রভাব পড়ে পয়েন্টে। প্রথমার্ধ শেষে মাত্র ২ (১৪-১২) পয়েন্টে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে খেই হারাতে থাকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে খেলা উগান্ডা। এ সুযোগে দুবার উগান্ডাকে অলআউট করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন বাংলাদেশের মেয়েরা। তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় জয়।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের কোচ মুন্সী আরদুজ্জামান বলেছেন, ‘উগান্ডা আমাদের চেয়ে শারীরিকভাবে এগিয়ে। আমরা চেয়েছিলাম প্রথম ৫ মিনিট ওদের খেলা দেখব। সেটাই করেছি। আমাদের বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লেগেছে।’
বাংলাদেশ-উগান্ডা ম্যাচের আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। নারীদের কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর এটি। ২০১২ সালে ভারতে হওয়া প্রথম আসরে বাংলাদেশের মেয়েরা কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল।

এবার ঘরের মাঠে শূন্য হাতে টুর্নামেন্ট শেষ করতে চায় না স্বাগতিকেরা। বাংলাদেশ কোচের কথায়ও ফুটে উঠল সে প্রত্যাশা, ‘আশা করছি, এই জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। মেয়েরা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলে একটি পদক জিতবে।’
আগামীকাল বিকেল ৫টায় ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জার্মানি।


















