নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেছেন, আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হবে। তফসিলের মাধ্যমে তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রধান দুটি দায়িত্ব হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ইতিমধ্যে আমরা করে ফেলেছি। জাতীয় নির্বাচন, যেটা পাঁচ বছর পরপর হয়, সেটা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে আমাদের করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারিখ ঘোষণা করব যথাসময়ে। জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তারিখ ঘোষণা করেন। আমরা সেটা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তফসিলের মাধ্যমে জানিয়ে দেব।’
ভোট গ্রহণের জন্য এবার নতুন একটি ব্যবস্থার কথা জানিয়ে আনিছুর রহমান বলেন, ‘এবার ভোট গ্রহণের দিন সকালবেলা কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে। অতীতে ব্যালট পেপার আগেই কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা হতো। বিভিন্ন ধরনের কথা আমাদের শুনতে হয়। যদিও আমরা তখন দায়িত্বে ছিলাম না। তবু আমাদের এসব কথা শুনতে হয়। সে কারণে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দুর্গম পার্বত্যাঞ্চল, চরাঞ্চল, দ্বীপাঞ্চলগুলো বাদে অন্য সব কেন্দ্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে।’ আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার না–ও করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর বলেন, ‘আমরা কাউকে জোর করে অংশগ্রহণ করাতে পারব না। শুরু থেকেই সকল রাজনৈতিক দলকে আমরা আহ্বান করেছিলাম। আমরা সংলাপে বসেছিলাম। কেউ কেউ আমাদের সংলাপে আসেনি। কেউ কেউ আমাদের এখনো মানেনি। আমরা তাদের বারবার পত্র দিয়ে আহ্বান জানিয়েছি। আমরা আহ্বান সব সময় করে যাচ্ছি। আমাদের দরজা তাদের জন্য সব সময় খোলা। সবার সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি আছি। সংবিধানের মাধ্যমে আমাদের যতটুকু ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার মধ্য থেকে আমরা সবকিছু করব।’
নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কে কী বলল, কোথা থেকে কারা কীভাবে আমাদের সেংশন দেবে, অমুক করবে, সমুক করবে, সেগুলি আমাদের বিষয় না। এগুলির সরকার টু সরকারের বিষয়। এগুলো আমাদের বিষয় না। কমিশন সংবিধানের মধ্যে থেকে কাজ করবে। সংবিধান ও অন্যান্য আইন আমাদের যে ক্ষমতা দিয়েছে, সেটা আমরা প্রয়োগ করব।’
স্মার্ট পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম প্রমুখ।