নতুন তোশাখানা মামলার রায়ের পর পাকিস্তানজুড়ে আন্দোলনের ডাক ইমরান খানের

0
27
ইমরান খান

নতুন তোশাখানা (রাষ্ট্রীয় উপহার) মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান দেশজুড়ে গণ-আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

গতকাল শনিবার পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) একটি বিশেষ আদালত ইমরান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ওই কারাদণ্ড দেন।

কারাগারে থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইমরান খানের সরাসরি প্রবেশের অধিকার নেই। তবে এক্সে তাঁর আইনজীবী একটি কথোপকথনের বিবরণ প্রকাশ করেছেন। সেখানে ইমরান খান বলেন, ‘আমি খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদিকে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বার্তা পাঠিয়েছি। নিজেদের অধিকারের জন্য পুরো জাতিকে জেগে উঠতে হবে।’

ইমরান খান বলেছেন, এ রায় শুনে তিনি অবাক হননি; বরং তাঁর আইনি দলকে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে বলেছেন।

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, (বিভিন্ন মামলায়) গত তিন বছরে দেওয়া রায়ের মতো এটিও ভিত্তিহীন ও পূর্বপরিকল্পিত। কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই এবং তাঁর আইনি দলের কোনো বক্তব্য না শুনেই বিচারক তড়িঘড়ি এই রায় দিয়েছেন। তিনি সংবিধান রক্ষা ও আইনের শাসনের জন্য আইনজীবী সমাজকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।
পিটিআই এক বিবৃতিতে এ রায়কে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নিকৃষ্টতম উদাহরণ’ ও ‘অসাংবিধানিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। দলটির নেতাদের অভিযোগ, ইমরান খানের কারাবাসের মেয়াদ বৃদ্ধি ও বর্তমান সরকারকে খুশি করতেই এ রায়।

পিটিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক সালমান আকরাম রাজা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইমরান খান দৃঢ় আছেন, তিনি কারও কাছে ক্ষমা চাইবেন না।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলাটি অত্যন্ত দুর্বল সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে সাজানো।
অন্যদিকে, পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার ও শেখ ওয়াকাস আকরাম বলেন, বর্তমানে শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক পন্থায় প্রতিরোধ ছাড়া আর কোনো পথ নেই। তাঁরা এ আদালতকে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ হিসেবে আখ্যা দেন।

ইমরান খানের বোন আলিমা খান এ রায়কে একটি ‘পূর্বলিখিত চিত্রনাট্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। অন্য একটি পোস্টে পিটিআই নেতা ওমর আইয়ুব বলেন, পাকিস্তানে বর্তমানে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। পুরো বিচারপ্রক্রিয়া প্রহসনে পরিণত হয়েছে।

এ মামলা ইতালির বিখ্যাত ব্র্যান্ড বুলগারির একটি ‘জুয়েলারি সেট’ কেনার সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০২১ সালের মে মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান সরকারি সফরে সৌদি আরবে গেলে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তাঁকে ওই জুয়েলারি সেট উপহার দিয়েছিলেন। পরে ইমরান নামমাত্র মূল্যে সেটি নিজের কাছে রেখে দেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইমরান মাত্র ২৯ লাখ রুপির বিনিময়ে ওই জুয়েলারি সেট নিয়ে নেন। অথচ এটির বাজারমূল্য প্রায় ৮ কোটি রুপি।

২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.