নগদে প্রশাসক বসাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

0
56
ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ‘নগদ

অবৈধভাবে গড়ে উঠা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস নগদে প্রশাসক নিয়োগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে আগামী এক বছরের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে হয়েছে। তাকে সহায়তা করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তা। বুধবার প্রশাসক ও তাকে সহায়তাকারী নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ‘নগদ’র প্রশাসক হিসেবে চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদার আগামী এক বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। তাকে সহায়তা করবেন পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, যুগ্ম–পরিচালক আনোয়ার উল্যাহ্, পলাশ মন্ডল, আবু ছাদাত মোহাম্মদ উয়াছিন, উপ পরিচালক চয়ন বিশ্বাস ও মো. আইয়ুব খান।

২০১৮ সালে একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে নগদ। শুরুতে প্রতিষ্ঠানটিতে ডাক বিভাগের মালিকানার কথা বলা হলেও পরে জানানো হয় লাভের একটি অংশ পাবে ডাক বিভাগে। মালিকানার সবই বেসরকারি খাতের। আর মালিকানায় কারা আছে তা নিয়েও সব সময় ধোঁয়াশা ছিল। তদারক সংস্থা ঠিক না করেই অনেকটা জোর করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স ছাড়াই কেবল অনাপত্তির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থেকে পদত্যাগ করে পলাতক আব্দুর রউফ তালুকদার কিছুদিন আগে নগদ ও কড়ির নামে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়।

গত জুন মাসে নগদের নামে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ সুবিধা দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তপশিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানি কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারে না। এই শর্ত শিথিল করে ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, আরসিসি ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি ও ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেডকে বাড়তি শেয়ার ধারণের সুযোগ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৮ মে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় নগদকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৮ আগস্ট নগদ ও কড়ির ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিগত অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মোট ৫২টি আবেদন পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে দেশের অন্যতম এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদসহ ৯টি প্রস্তাব পাঠানো হয় পর্ষদে। তবে অদৃশ্য কারণে দেশের সব চেয়ে বড় এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশকে বাদ দিয়ে কেবল ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ এবং ‘কড়ি ডিজিটাল পিএলসি’কে সম্মতিপত্র দেওয়া হয়।

জানা গেছে, নগদের মালিকানায় আসলে কারা আছে তা বের করতে গত ১৯ আগস্ট বিনিয়োগকারী পাঁচ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নগদ ডিজিটাল ব্যাংকে পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান শেয়ারহোল্ডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে– ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস, জেন ফিনটেক, ফিনক্লুশন ভেঞ্জারস এবং ট্রুপে টেকনোলজিস। এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও ঠিকানা, গঠনকালীন মালিকানা কাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, ব্যবসায়িক কার্যক্রম, বর্তমান মালিকানা ও তাদের নাগরিকত্ব, গত তিন বছরের কর পরবর্তী নিট মুনাফা ও নিট সম্পদ এবং হোল্ডিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সাব সিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়ীক কার্যক্রম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.