ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত সেই শিক্ষকের মরদেহ হস্তান্তর

0
9
ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা

খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানার মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনার পূর্বে একই প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে জেলে ছিলেন তিনি।

বুধবার (২ অক্টোবর) মধ্যরাতে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তৌফিকুল আলম।

তিনি বলেন, নিহত সোহেল রানার স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরা খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল থেকে রাতে মরদেহটি গ্রহণ করেছেন। তারা মরদেহ নিয়ে রাতেই তাদের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। জেলার রামগড় সীমানা পর্যন্ত নিরাপত্তা দিয়ে তাদের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে ওই স্কুলশিক্ষককে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং সেখান হতে পালাতে গিয়ে চলন্ত টমটম গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হন। পরে সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জেলা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন।

উল্লেখ্য নিহত সোহেল রানাকে আরো কয়েকটি ধর্ষণ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে লক্ষিপুর হতে খাগড়াছড়িতে বদলী করা হয়। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তার সহকর্মী একজন শিক্ষক মোঃ সিকান্দার ফেসবুকে লিখেন- লক্ষিপুরে থাকাকালিন নিহত সোহেল রানা অপকর্ম করে অন্তত ১৫জন স্কুলছাত্রীর জীবন নষ্ট করেছেন। বিগত সরকারের প্রভাবশালীদের প্রভাবে তাকে শাস্তি না দিয়ে খাগড়াছড়িতে সোহেল রানাকে বদলী করা হয়েছে। অপর দিকে ২০২২ সালেও খাগড়াছড়িতে ১০ম শ্রেণীর একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে জেলে ছিলেন দীর্ঘ সময়। সেখান থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে এই অপকর্মটি সংঘটিত করেছেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে ওই শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রদায়ের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়ক, মহাজন পাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাত করা হয়। পরে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এরপর বুধবার তা প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের কাজে বাধা এবং ধর্ষণের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.