আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ১০ ডিসেম্বর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই দিন থেকে তাপমাত্রা এর চেয়ে আর বাড়েনি। ১১ ডিসেম্বর ১৩ দশমিক ৪, ১২ ডিসেম্বর ১৩ দশমিক ২, ১৩ ডিসেম্বর ১৪, ১৪ ডিসেম্বর ১৩, ১৫ ডিসেম্বর ১১ দশমিক ৫ ও আজ শুক্রবার ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিললেও আকস্মিক তাপমাত্রা কমে যাওয়া এবং উত্তর থেকে ধেয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এতে হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে চার উপজেলায় ইউএনওদের কাছে ৭০০ হাজার কম্বল ও শীতবস্ত্র পাঠানো হয়েছে। আরও ২১ হাজার ত্রাণ ভান্ডারে মজুদ আছে। শিগগিরই হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের মধ্যে এসব বিতরণ করা হবে।
শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগবালাই। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালে শিশুদের জন্য ১৫টি শয্যা বরাদ্দ। অথচ এই শয্যার বিপরীতে কয়েক দিন ধরে ঠান্ডাজনিত নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা আক্রান্ত ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোনো কোনো দিন শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) মাহবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের অন্তবিভাগে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে যেমন চিকিৎসা নিচ্ছে, তেমনি বহির্বিভাগেও ১৫০ জনেরও বেশি রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। শীতজনিত এসব রোগের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো, অযথা বাইরে বের না করা, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, প্রয়োজনীয় সব কটি টিকা নিশ্চিত করা এবং শিশুদের গরম পোশাক পরানোর অভ্যাস করতে পরামর্শ দেন তিনি।
শৈত্যপ্রবাহের কারণে সন্ধ্যার পর থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরে সাধারণ মানুষের চলাচল অনেকাংশেই কমে গেছে। শহরের নতুন ও পুরোনো শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয় বেশ ভিড় দেখা গেছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের সরদারপাড়ার গৃহবধূ ফেরদৌসী বেগম বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ায় পাল্লা দিয়ে শীতের পোশাকের দামও একলাফে বেড়ে গেছে। দোকানিরা নিজেদের খেয়ালখুশিমতো দাম হাঁকাচ্ছেন। ফলে নতুন পোশাক কেনা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।