চীন, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনার নতুন উপধরন দেখা দিয়েছে। এ ধরন প্রতিরোধে বাংলাদেশের সব বিমান, স্থল ও সমুদ্রবন্দরে স্ট্ক্রিনিং বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব বন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।
তিনি বলেন, শনাক্ত হওয়া বিএফ.৭ আগের বিএ.৫-এর একটি উপধরন। এটাকে বলা হচ্ছে আর.১৮, অর্থাৎ একজন থেকে ১৮ জনে সংক্রমিত হতে পারে। করোনার অন্য ধরনের চেয়ে এটার সংক্রমণ ক্ষমতা চার গুণ বেশি। এটি খুব কম সময়ে আক্রান্ত করতে সক্ষম এবং এতে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। এটার উপসর্গ সম্পর্কে যা জানা গেছে, তা অন্য ধরনের মতোই। তিনি আরও বলেন, ভয়ের বিষয় হচ্ছে টিকা না নেওয়া ব্যক্তির ওপর এটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। যাদের অন্য রোগ আছে ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। তাই দ্বিতীয় বুস্টার অর্থাৎ চতুর্থ ডোজ দ্রুত নিয়ে নিন।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন সাত থেকে আটের মধ্যে থাকলেও আইইডিসিআরকে জিনোম সিকোয়েন্স চলমান রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে অধিদপ্তরের এ অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, এতে করোনার নতুন ধরনটি দেশে এলে দ্রুত শনাক্ত সম্ভব হবে।
কভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। সেখানে সম্মুখসারির ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ নেওয়া এবং এর জন্য প্রচার বাড়ানোর কথা হয়েছে। যাঁরা কোমরবিডিটির মধ্যে আছেন, তাদের অবশ্যই সুরক্ষাসামগ্রী যেমন- মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে। দেশের বিভিন্ন পোর্টে এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সব জায়গায়সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করে আইসোলেশনে নিতে হবে। যেসব দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।’
হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখা প্রসঙ্গে ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ডিএনসিসি হাসপাতালকে আরও বেশি সুসজ্জিত করা হয়েছে, যাতে বেশি রোগী সেখানে ভর্তি ও সেবা নিশ্চিত করা যায়। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেলেও যাতে চিকিৎসা সংকট দেখা না দেয় সেজন্য দেশের সব হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটগুলো প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন এ উপধরনের উপসর্গ এবং এর চিকিৎসায় করণীয় নির্ধারণের জন্য দু-এক দিনের মধ্যে কারিগরি কমিটির মিটিং হবে।
এদিকে, আট দিন পর দেশে করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সবশেষ গত ১৭ ডিসেম্বর কভিডে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ছয়জন করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ দিন সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৭২টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ছয় রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ দিনে দেশে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ২৪ হয়েছে। মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৩৯ জন।