সে বহু বহু বছর আগের কথা। চীনকে বহিঃ শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে দীর্ঘ এক প্রাচীর গড়ে তুলেছিলেন চীনা সম্রাটরা, যা চীনের মহাপ্রাচীর নামে পরিচিত। কালের পরিক্রমায় সেই প্রাচীর অনেকটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এরই মধ্যে প্রাচীরে নতুন করে ক্ষতি করেছেন দুই শ্রমিক। তবে চীন আক্রমণ মোটেও তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁরা প্রাচীর খুঁড়ে নিজেদের জন্য রাস্তা তৈরি করতে চেয়েছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে চীনের শানসি প্রদেশের ইউয়ু এলাকায়। গত মাসের ২৪ তারিখে প্রাচীরের ক্ষতি চোখে পড়ে স্থানীয় পুলিশের। এ নিয়ে তখনই খোঁজখবর চালিয়ে সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশের সদস্যরা। তাঁদের কাছে পাওয়া যায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সকাভেটর। গ্রেপ্তার দুজনের একজন ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ। অন্যজন নারী। তাঁর বয়স ৫৫ বছর।
ওই এক্সকাভেটর দিয়েই প্রাচীর খুঁড়ছিলেন ওই দুই শ্রমিক। কেন তাঁরা এই কাণ্ড করতে গেলেন, তা তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছিল পুলিশ। জবাবে তাঁরা জানান, তাঁরা নির্মাণশ্রমিক। কর্মস্থল প্রাচীরের কাছেই। তবে অনেক পথ ঘুরে তাঁদের সেখানে যেতে হয়। কর্মস্থল থেকে দূরত্ব কমাতে প্রাচীরে গর্ত খুঁড়ে রাস্তা তৈরি করছিলেন তাঁরা। এ ঘটনা গত সোমবার সামনে এনেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, প্রাচীরের যে ক্ষতি হয়েছে, তা মেরামত করা আর সম্ভব নয়।
চীনের মহাপ্রাচীরের যে অংশে রাস্তা বানানোর জন্য খোঁড়া হয়েছে, তা নির্মাণ করা হয়েছিল মিং সাম্রাজ্যের সময়ে। ১৩৬৮ থেকে ১৬৪৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলেছিল ওই অংশের নির্মাণকাজ। আর প্রাচীরটি নির্মাণে প্রথম হাত লাগানো হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২২০ শতকে। চীনে প্রায় ১৩ হাজার মাইল এলাকাজুড়ে রয়েছে এই প্রাচীর। ১৯৮৭ সালে প্রাচীরটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।