ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে অকল্যান্ড সিটি হজম করেছিল ১৬ গোল। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ১০ গোল খাওয়ার পর বেনফিকার বিপক্ষে খেয়েছিল আরও ৬ গোল। আর্জেন্টিনার ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের বিপক্ষে গতকাল রাতের ম্যাচেও তাদের বড় হার প্রত্যাশা করছিল অনেকে। স্কুলশিক্ষক, কোমল পানীয় বিক্রেতা এবং রিয়েল এস্টেট এজেন্টসহ নানা পেশায় যুক্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া নিউজিল্যান্ডের অপেশাদার দলটির ভরাডুবিই তো ছিল প্রত্যাশিত!
কিন্তু কাল রাতে অকল্যান্ড ছিল ভিন্ন মেজাজের এক দল। দুই ম্যাচে চার হালি গোল খাওয়ার পর গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়টাকে আরেকটু হয়তো রাঙাতে চেয়েছিল তারা। আর অকল্যান্ড সিটির সেই চাওয়ায় কপাল পুড়ল বোকা জুনিয়র্সের। অপেশাদার এই দলটির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে এখন তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগে দ্বিতীয় সফলতম দলটি।
প্রথম দুই ম্যাচের একটিতে হেরে এবং অন্যটিতে ড্র করে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব বোকা জুনিয়র্স। তবে প্রত্যাশা ছিল বেনফিকার বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের বড় জয় এবং অকল্যান্ড সিটির বিপক্ষে নিজেদের বড় জয়ে ঘুরে যাবে ‘সি’ গ্রুপের সমীকরণ।
শেষ পর্যন্ত কোনোটাই হয়নি। বেনফিকা হারিয়েছে বায়ার্নকে আর অকল্যান্ডের সঙ্গে জিততে পারেনি বোকা। যা শেষ পর্যন্ত গ্রুপ পর্ব থেকে বোকার বিদায়ের কারণ হয়েছে। তবে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় ছাপিয়ে অকল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করাটাই এখন বিব্রতকর এক পরিস্থিতিতে ফেলেছে আর্জেন্টাইন ক্লাবটিকে।

ন্যাশভিলে গতকাল ম্যাচটা অবশ্য একপক্ষীয়ই ছিল। ম্যাচজুড়ে ৭৪ শতাংশ বলের দখল রেখে ৪১টি শট নিয়ে ১০টি লক্ষ্যে রাখে বোকা, কিন্তু তারা গোল আদায় করতে পারে মাত্র ১টি। অন্যদিকে ২৬ শতাংশ বলের দখল রাখা অকল্যান্ড সিটি ৩ শটে ২টি লক্ষ্যে রেখে ১টি গোল ঠিকই আদায় করে নেয়।
ম্যাচের ২৬ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে লিড নেয় বোকা। তবে বিরতির পর ৫২ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে গোল করে অকল্যান্ড সিটিকে সমতায় ফিরিয়ে উল্লাসে মাতান ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান থমাস গ্রে। যিনি পেশায় মূলত একজন স্থানীয় স্কুলশিক্ষক। সমতায় ফেরার পর বাজে আবহাওয়ার কারণে ম্যাচ প্রায় ৪০ মিনিটের মতো বন্ধ ছিল। তবে এরপর খেলা শুরু হলেও পরিস্থিতি আর বদলাতে পারেনি বোকা। ড্রয়ের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের।
ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত স্কুলশিক্ষক ও ফুটবলার গ্রে বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্লাবকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দিতে পারে। এটা দীর্ঘ ও কঠিন এক পথ ছিল।’
নিজের গোল নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ক্লাবের জন্য এর গুরুত্ব অনেক। আমরা খুব ছোট একটা ক্লাব। আমি খুব খুশি, কারণ, এটাই প্রাপ্য ছিল আমাদের।’