হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী নিয়োগ না পাওয়া সাবেক দুই অতিরিক্ত বিচারকের করা আপিল ও লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ রায় দেন। ঘোষিত রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, আপিল ও লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করা হলো।
স্থায়ী নিয়োগ না পাওয়া সাবেক দুই বিচারক হলেন এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ফরিদ আহমদ শিবলী।
আইনজীবীরা বলেছেন, সাবেক এ দুই বিচারক পদে ফিরবেন কি না, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে।
আদালতে আপিল ও লিভ টু আপিলকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, আপিল বিভাগ তাঁদের আপিল ও লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। কী পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে। তাই আপাতত তাঁরা বিচারপতি পদে ফিরছেন না।’
এর আগে ২০১২ সালের ১৪ জুন আলতাফ হোসেনসহ ৬ জন দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৪ সালের ৯ জুন তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বাদ পড়েন এ বি এম আলতাফ হোসেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্থায়ী নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান ও আলতাফ হোসেন হাইকোর্টে পৃথক রিট করেন।
২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে দুটি রিট খারিজ হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আলতাফ হোসেন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। ২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর শুনানি নিয়ে লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। এরপর একই বছর তিনি নিয়মিত আপিল করেন।
অন্যদিকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দুই বছরের জন্য ফরিদ আহমদ শিবলীসহ ১০ জন ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পান। এরপর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে আট বিচারপতির নিয়োগের প্রজ্ঞাপন ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। বাদ পড়েন জে এন দেব চৌধুরী (প্রজ্ঞাপনের আগে মারা যান) ও শিবলী। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্থায়ী নিয়োগ পেতে শিবলী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণসহ তা নিষ্পত্তি করে দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে শিবলী লিভ টু আপিল করেন।
এ বি এম আলতাফ হোসেনের আপিল ও ফরিদ আহমদ শিবলীর করা লিভ টু আপিল একসঙ্গে শুনানি হবে বলে ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত দেন। এর ধারাবাহিকতায় আপিল ও লিভ টু আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
ফরিদ আহমদ শিবলীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সাবেক দুই বিচারক পদে ফিরবেন কি না, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল যেহেতু খারিজ হয়নি, তাই আপিলে দাবি করা যুক্তিগুলোর সপক্ষে মতামত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’