বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নিয়ে চীনের সঙ্গে একটি কাঠামোগত চুক্তি সই করেছে নেপাল, যা নেপালে চীনের প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করেছে। সাত বছর আগে একটি প্রাথমিক চুক্তি সই হলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় এই নতুন চুক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করবে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি সোমবার থেকে বেইজিংয়ে চার দিনের সফরে রয়েছেন। জুলাই মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। ঐতিহ্য ভেঙে তিনি প্রথম সফরের জন্য নয়াদিল্লিকে না বেছে, শি জিনপিংয়ের সাথে ঘনিষ্ঠতা এবং চুক্তি চূড়ান্ত করতে চীনকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
২০১৭ সালে নেপাল ও চীন বিআরআই প্রকল্পের জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি করেছিল। চীনের এই উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। তবে, বিগত সাত বছরে কোনো প্রকল্পের পরিকল্পনা বা বাস্তবায়ন হয়নি, কারণ চুক্তির কাঠামো নির্ধারণ করা যায়নি এবং নেপালের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব ছিল।
বুধবারের নতুন চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশ প্রকল্পের বিস্তারিত পরিকল্পনা, যেমন সড়ক উন্নয়ন ও পরিবহন করিডর তৈরি এবং অর্থায়নের উপায় নিয়ে এগিয়ে যাবে। তবে ঋণ নিয়ে উদ্বেগ থাকায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলির জোট সরকারের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, নেপালি কংগ্রেস যেকোনও ঋণনির্ভর প্রকল্পে আপত্তি জানিয়েছে।
নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ পোস্টে জানিয়েছে, আজ নেপাল ও চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার কাঠামো সই করেছে। তবে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
চীন এরই মধ্যে পোখারায় একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য নেপালকে ২১৬ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এটি কাঠমান্ডু থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং গত বছর এটি চালু হয়। চীন এই বিমানবন্দরকে বিআরআই-এর সফলতার প্রতীক হিসেবে দাবি করলেও ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের অভাবে এটি সমস্যার মুখে পড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার একে একে মিত্র হারাতে বসেছে ভারত। শ্রীলংকা, মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশ নিয়ে খুব বেশি স্বস্তিতে নেই দিল্লি। নেপাল নিয়ে অস্বস্তি আগে থেকেই ছিল। তবে চীনের সঙ্গে কাঠমাণ্ডুর নতুন এই চুক্তি চিন্তা বাড়িয়েছে দিল্লির।