থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে সাময়িক বরখাস্ত করলেন আদালত, কারণ কী

0
20
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, ফাইল ছবি: রয়টার্স

ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের ঘটনায় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর পদত্যাগের জোর দাবি উঠেছে। তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী ব্যাংককে।

গত মে মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিতর্কিত এক সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের সঙ্গে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ফোনের আলোচনা ফাঁস হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

ফোনে ওই আলোচনায় পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ বলে ডেকে তাঁর প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ করেন বলে জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়। এরপরই পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামেন মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে পিটিশন দায়ের করা হয়।

সাংবিধানিক আদালতে আজ মঙ্গলবার ভোটাভুটি হয়। আদালত ৭-২ ভোটে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত দেশের ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্ব পালন করবেন।

থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললে চলে। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সাংবিধানিক আদালতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন পদচ্যুত হলে ২০২৪ সালের আগস্টে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। থাইল্যান্ডে তিনিই হচ্ছেন সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৭ বছর। পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ফিউ থাই পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট মেয়ে।

পেতংতার্ন ব্যাংককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। উং ইং ডাকনামেও পরিচিত পেতংতার্ন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন ফিউ থাই পার্টির ইনক্লুশন অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির প্রধান হন তিনি।

২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় সন্তানের মা হন পেতংতার্ন। নির্বাচনে তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। পেতংতার্ন থাকসিন পরিবার থেকে সরকারের শীর্ষ পদে আসা তৃতীয় ব্যক্তি। বাবা থাকসিনের পাশাপাশি পেতংতার্নের ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রাও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.