চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে অপহৃত মো. আবুল কালামকে উদ্ধারে (৪৮) তিন দিন ধরে অভিযান চালায় পুলিশ ও র্যাব। গতকাল সোমবারও পাহাড়ে পুলিশ ও র্যাবের অভিযান হয়েছে। গতকাল বিকেলে পুলিশ খবর পায়, কালাম তিন দিন ধরে চট্টগ্রাম নগরের বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের অভিযান চলাকালে অপহৃত কালাম হাসপাতালে ভর্তি থাকা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবারের দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে অপহৃত হন আবুল কালাম। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেল ৫টা ১১ মিনিটে নিজে এসে অর্থোপেডিক সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন কালাম। ভর্তি ফরমে তাঁর ঠিকানা লেখা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের হাজি ক্যাম্প এলাকায়।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, গত শুক্রবার থেকে তাঁরা কালামকে উদ্ধারে বাড়বকুণ্ড পাহাড় চষে বেড়িয়েছেন। অথচ তিন দিন ধরে কালাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ খবর তাঁরা পান গতকাল সোমবার বিকেলে। তাদের ধারণা, কালামের পরিবার বিষয়টি জানত। স্বজনেরা প্রথমে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান। পরে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কথা জানান। সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। কীভাবে কালাম হাসপাতালে গেলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, অপহরণের পর কালামের পরিবারের কাছে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পুলিশকে না জানিয়ে সেই মুক্তিপণের টাকা দিতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কালামের স্ত্রী জাহানারা বেগম, দুই আত্মীয় শাহানা বেগম ও মরিয়ম বেগম। এরপর তাঁদের মুক্তিতে ৫ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। গত শনিবার ভোরে অপহৃত তিন নারীকে বাড়বকুণ্ড পাহাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু তখনো কালাম উদ্ধার না হওয়ায় পুলিশের অভিযান চলতে থাকে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, গত রোববার রাতেও র্যাব ও পুলিশের ৪০ জনের একটি দল নিয়ে পাহাড়ে চিরুনি অভিযান চালিয়েছেন তাঁরা। অপহরণকারীরা তাদের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সম্ভবত কালামকে ছেড়ে দিয়ে গেছে। তবে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। পেশাদার অপহরণকারীরা মুক্তিপণ নেন, কিন্তু সাধারণত মারধর করেন না। পরিবারের সদস্যরা কিছু লুকাতে চাইছে বলে মনে করছে পুলিশ।