ডা. সাবরিনাসহ ৭ জনের নামে দুদকের মামলা

0
47
ডা. সাবরিনা

করোনা মহামারির সময়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেনসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১০ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন— স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেনের স্বামী ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল চৌধুরী, স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা, স্টাফ আ.স.ম সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ওরফে হিমু ও তানজিনা পাটোয়ারী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামে একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও অন্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ‘ওভাল গ্রুপের’ নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ‘জেকেজি হেলথ কেয়ার’কে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।

বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তাদের অফিসের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেস্ট ফি নেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য আনুমানিক পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু সংগৃহীত স্যাম্পল যথাযথ পরীক্ষা না করে আনুমানিক ১৫ হাজার ৪৬০টি ভুয়া ও জাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। একইসঙ্গে জাল রিপোর্ট সেবা গ্রহীতাদের কাছে সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউনের মধ্যে মাত্র ৩ মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে এক কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭ টাকা জমা করা হয়। যা করোনা টেস্টের টাকা বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির উদ্দেশ্যে নিজের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে দুটো সচল জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করেন— যা দিয়ে দুটো ভিন্ন টিআইএন নম্বর খোলেন এবং প্রকৃত জন্ম ১৯৭৮ সালকে ১৯৮৩ বানিয়ে তার কর্মস্থলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে চাকরির মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা অবৈধভাবে গ্রহণের অপচেষ্টা করেছেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার, জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট তৈরি, সেগুলো সেবা গ্রহীতাদে রকাছে সরবরাহ করে করোনা মহামারির সময়ে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তার ঘটিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.