মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ শুনতে পাচ্ছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তের মানুষ। গত দুই দিন বন্ধ থাকার পর আবারও সীমান্তে গোলার শব্দ ভেসে আসছে ওপার থেকে।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তে মিয়ানমারের ওপার থেকে মর্টারশেলের শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
সীমান্তের কাছকাছি টেকনাফের পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই দিন রাখাইন রাজ্যে থেকে গোলার শব্দ পাওয়া যায়নি। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে ওপার থেকে ফের ভারী গোলার বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। এতে বিশেষ করে নারী-শিশুদের নিয়ে ভয়ে রয়েছে সীমান্তের মানুষ।
বন্ধ থাকার পর আবারও সীমান্তের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সীমান্তের বসবাসকারীদের মাধ্যমে ওপার গোলার বিকট শব্দ বিষয়ে অবহিত হয়েছি। সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’
সীমান্তের লোকজন জানায়, ‘টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ এলাকাগুলোতে সোমবার থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
সীমান্তের সাবরাংয়ের বাসিন্দা আবদুল গফুর বলেন, ‘ফের ভোর নাফনদের ওপারে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। মনে হচ্ছে মাটি খুড়ে কেউ নিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফনদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘রাখাইনের সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। পাশাপাশি ওপারের চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে নতুন করে রোহিঙ্গা যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি শক্ত অবস্থানে রয়েছে।’
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন,‘সীমান্ত অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সকল আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সংস্থাগুলো প্রস্তুত রয়েছেন।’