হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ২০১২-১৩ মৌসুমের বুন্দেসলিগা শুরু করেছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। স্বপ্ন পূরণ হয়নি ডর্টমুন্ডের। অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখিয়ে ছয় ম্যাচ হাতে রেখেই বুন্দেসলিগা শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। ৩৪ ম্যাচের লিগে নিকটপ্রতিদ্বন্দ্বী ডর্টমুন্ডের চেয়ে ২৫ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে মৌসুম শেষ করে বাভারিয়ান পরাশক্তিরা।
সেই শুরু, এরপর আর বায়ার্নের হাত থেকে বুন্দেসলিগার চ্যাম্পিয়নের স্মারক ‘মাইস্টারশালে’ বা চ্যাম্পিয়নের বোল কেড়ে নিতে পারেনি কেউ। পরশু ডর্টমুন্ডের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় টানা ১১তম বারের মতো লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বায়ার্ন। ইউরোপের বড় পাঁচ লিগে টানা লিগ জয়ের রেকর্ড এটিই।
গত মৌসুম থেকেই রেকর্ডটির মালিক বায়ার্নের সামনে এখন টানা লিগ জয়ের বিশ্ব রেকর্ড করার হাতছানি। সেই রেকর্ড ছুঁতে আরও টানা চারবার ও রেকর্ড ভাঙতে আরও টানা পাঁচ মৌসুম চ্যাম্পিয়ন হতে হবে বায়ার্নকে। টানা লিগ জয়ের বিশ্ব রেকর্ডটা তাফেয়া এফসির। ১৯৯৪ থেকে ২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ ভানুয়াতুর পোর্ট ভিলা প্রিমিয়ার লিগে টানা ১৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয় তাফেয়া এফসি। তাফেয়ার একচ্ছত্র আধিপত্য ভাঙে অ্যামিকেল এফসি। পরের ছয়টি লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় ক্লাবটি। তাফেয়া আবার চ্যাম্পিয়ন হয় ২০১৮-১৯ মৌসুমে। এরপর আর লিগ জেতা হয়নি ক্লাবটির।
টানা লিগ জয়ের রেকর্ডে এর পরের দুটি নামই ইউরোপের—স্কোনতো রিগা ও লিঙ্কন রেড ইম্পস। স্কোনতো ১৯৯১ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে লাটভিয়ার ও লিঙ্কন ২০০৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে জিব্রাল্টারের টানা ১৪ বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়।
আলেকসান্দ্রস স্তারকোভসের কোচিংয়েই ১৪ শিরোপার শেষ ১২টি জিতেছিল স্কোনতো। স্তারকোভস এরপর রাশিয়ার স্পার্তাক মস্কোতে যোগ দিয়ে স্কোনতোর ভাগ্যও যেন সঙ্গে করে নিয়ে যান। স্তারকোভস চলে যাওয়ার পর টানা তিন মৌসুম চ্যাম্পিয়ন হয় এফকে ভেন্তসপিলস। স্কোনতো এরপর ২০১০ সালে আবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ২০১৬ সালে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
জিব্রাল্টারের ক্লাব লিঙ্কন ২০১৭ সালে ইউরোপা এফসির মাত্র ১ পয়েন্টে পেছনে থেকে রানার্সআপ হয়ে টানা ১৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ হারায়। সেই মৌসুমে ২৭ ম্যাচে ১০০ গোল করা লিঙ্কন পয়েন্ট হারিয়েছিল মাত্র ৯টি। এর পরের পাঁচ মৌসুমে অবশ্য চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ক্লাবটি।
টানা লিগ জয়ে তাফেয়া, স্কোনতো, লিঙ্কন ও বায়ার্নের মাঝে আরও তিনটি ক্লাব। জর্ডানের আল ফয়সালি ১৯৫৯ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে হওয়া ১৩টি লিগেই চ্যাম্পিয়ন হয়। অন্য দুটি ক্লাব নরওয়ের রোজেনবোর্গ (১৯৯২-২০০৪) ও বেলারুশের বাতে বরিসভ (২০০৬-২০১৮)।
বুলগেরিয়ার লুদোগোরেৎস রাজগ্রাদেরও সম্ভাবনা আছে বায়ার্নকে পেছনে ফেলার। গত মৌসুমে টানা ১১তম লিগ জেতা লুদোগোরেৎস এবারও জিততে পারে বুলগেরিয়ার শীর্ষ লিগ।
বায়ার্ন ছাড়াও টানা ১১ বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বুলগেরিয়ার লুদোগোরেৎস রাজগ্রাদ। টানা লিগ জয়ের চলমান রেকর্ড এটিই। তবে বুলগেরিয়ান লিগ এখনো শেষ হয়নি। লুদোগোরেৎসের সম্ভাবনা আছে টানা ১২তম লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।