চার বছর আগে শুরুতেই গণ্ডগোল পাকিয়ে বসেছিল পাকিস্তান। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে উইন্ডিজের কাছে হেরে বসেছিল তারা। ওই হারের ধাক্কাতেই ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিতে খেলা হয়নি তাদের। এবার জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গেছে পাকিস্তান।
শুক্রবার হায়দরাবাদে তাদের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, যাদের বিপক্ষে কোনো দিন হারেনি পাকিস্তান। ছয়বারের মোকাবিলায় প্রতিবারই জয় তুলে নিয়েছে। সহজ এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন তো বাবর আজম-শাহিন আফ্রিদিরা? নাকি ডাচ রূপকথা দেখবে ক্রিকেটবিশ্ব?
পাকিস্তানের সময়টা ইদানীং ভালো যাচ্ছে না বলেই নির্ভার থাকা যাচ্ছে না। গত মাসে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। সুপার ফোরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে বড় হার তো বটেই, শ্রীলঙ্কার কাছেও হেরেছে তারা। বিশ্বকাপের দুই প্রস্তুতি ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে। সে সঙ্গে ডাচদের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান সর্বশেষ লড়াইয়ে কমে মাত্র ৯ রানে এসে দাঁড়িয়েছে।
তবে অধিনায়ক বাবর আজম আশাবাদী, বিশ্বকাপে ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে পাকিস্তান, ‘গত সপ্তাহে এখানে (ভারত) আসার পর থেকে আমাদের চমৎকার প্র্যাকটিস সেশন কেটেছে। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও বেশ কাজে এসেছে।’
পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় চিন্তা ব্যাটিং নিয়ে। ওপেনিং দীর্ঘদিন ধরেই ছন্দে নেই। মিডল অর্ডারও ভালো করছে না। এ সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে অধিনায়ক বাবরকেই। র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে তিনি। আর প্রস্তুতি ম্যাচে ৮০ ও ৯০ রানের দুটি ইনিংস খেলে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ডাচদের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতেও মরিয়া বাবর, ‘আসরের প্রথম ম্যাচ সব সময়ই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমরা জয় দিয়ে শুরু করার অপেক্ষায় আছি।’
তাই বলে ডাচদের মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না বাবর। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের ১৪ নম্বর দল নেদারল্যান্ডস। তবে জিম্বাবুয়েতে বাছাই পর্বে উইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ডের মতো টেস্ট খেলুড়ে দেশকে টপকে বিশ্বকাপে এসেছে তারা। তাই তো ডাচদের বিপক্ষে বেশ সতর্ক বাবর, ‘এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য আমি নেদারল্যান্ডসকে অভিনন্দন জানাতে চাই। বাছাই পর্বে তারা দারুণ ক্রিকেট খেলেছে বলেই তারা আজ এখানে। কাজেই তাদের বিপক্ষে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। প্রথম বল থেকেই ঝাঁপাবো আমরা।’
ডাচরা স্পিনে কিছুটা দুর্বল। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের উইকেটও স্পিনবান্ধব। এ সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য স্কোয়াডে থাকা তিন স্পিনার শাদাব খান, উসামা মীর ও মোহাম্মদ নওয়াজকে নামিয়ে দিতে পারে পাকিস্তানি। শুধু তাই নয়, পার্টটাইম স্পিনার ইফতেখার এবং সালমানও হাত ঘোরাতে পারেন। নতুন বলে আক্রমণ শানাবেন দুই পেসার শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফ।
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের ইতিহাস খুব একটা ভালো না। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে অভিষেকের পর তারা মাত্র দুটি ম্যাচ জিতেছে। তবে ডাচদের এবারের দলটি অভিজ্ঞ। ইংলিশ কাউন্টিতে ব্যস্ত থাকায় বাছাই পর্ব মিস করা কলিন অ্যাকারম্যান, রুফল ফন ডার মারউই এবং পল ফন মিকেরেন দলে ফিরেছেন।
২০১১ সালে উপমহাদেশে বিশ্বকাপ খেলে যাওয়া ওয়েসলি বারেসিও আছেন। তবে ব্যাটিংয়ে মূল শক্তি ম্যাক্স ও’ডাউড, বিক্রমজিত সিং, তেজা নিদামানুরু এবং অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডস। ডাচদের তুরুপের তাস হলেন অলরাউন্ডার বাস ডি লিড। বাছাই পর্বে ২৮৫ রান করার পাশাপাশি মিডিয়াম পেসে ১৫ উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে আজ অঘটন ঘটে যেতে পারে।