জেসমিনের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছে তদন্ত কমিটি

র‍্যাব হেফাজতে মৃত্যু

0
184
তদন্তদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক। সোমবার সন্ধ্যায় নওগাঁ সার্কিট হাউস চত্বরে

নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের (৪০) র‍্যাব হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় দুজন প্রত্যক্ষদর্শীসহ তাঁর ছেলে, ভাই, মামা ও বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত দল। আজ সোমবার বিকেলে নওগাঁ সার্কিট হাউসে তদন্ত দলের সদস্যরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।

তদন্ত দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সার্কিট হাউস চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক ও তাঁর ভাই সুলতান মাহমুদ। তদন্ত দলের আমন্ত্রণে আসা অন্যদের তখনো জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল।

তদন্ত দলের সদস্যদের মধ্যে নওগাঁর জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইমতিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল করিম, সিভিল সার্জন আবু হেনা মো. রায়হানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানকে সার্কিট হাউসে ঢুকতে দেখা যায়।

জেসমিনের মামা নাজমুল হক বলেন, ‘জেসমিনকে আটক, এরপর হাসপাতাল এবং দাফন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, এর বর্ণনা আমাদের কাছ থেকে শুনেছে তদন্ত দল। এ ছাড়া জেসমিনের বাসা থেকে জেসমিন ও মামলার বাদী এনামুলের মধ্যকার টাকা লেনদেনের কাগজপত্র আমরা পেয়েছি। সেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি, তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ন্যায়বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী।’

জেসমিনের ভাই সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘আমার বোন সুস্থ ছিল। র‍্যাব আটকের পর অসুস্থ হন এবং তাঁদের হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ জন্য আমি র‍্যাবকেই দায়ী মনে করি। আশা করি, প্রকৃত দোষীরা চিহ্নিত হবেন।’

গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র‍্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল। পরের দিন ২৪ মার্চ সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তাঁর পরিবার অভিযোগ করে আসছে, তাঁকে র‍্যাব হেফাজতে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টও বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন।

র‍্যাবের ভাষ্য, প্রতারণার অভিযোগে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়েছিল। আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ মে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধান করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে। অন্য সদস্যরা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.