কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক ওরফে সোহেলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা যুবলীগের কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা) হিসেবে লড়ছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক ওরফে রাশেদ। শহিদুল হক তাঁর ছোট ভাই।
আওয়ামী লীগ থেকে ভাই বহিষ্কার, যুব মহিলা লীগ ছাড়লেন বোন
জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর বলেন, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত মেয়র প্রার্থী মাসেদুল হকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে শহিদুল হককে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না হওয়ায় যুবলীগের জেলা কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের শুরু থেকে মাসেদুলের পক্ষে মাঠে নামেন তাঁর ছোট দুই ভাই—কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল হক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সম্প্রতি কায়সারুল হককে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিবের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের একমাত্র বোন তাহমিনা হকও সম্প্রতি জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতির পদ ছেড়ে ভাইয়ের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। তবে শহিদুল হককে এত দিন প্রকাশ্যে বড় ভাইয়ের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীরও পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেননি তিনি।
নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান, কক্সবাজারে ১৩ নেতাকে বহিষ্কার করল আওয়ামী লীগ
এ বিষয়ে শহিদুল হক বলেন, অন্যায়ভাবে তাঁকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর বড় ভাই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হলেও এত দিন তিনি নীরব ছিলেন। এখন যেহেতু দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেহেতু ঘরে বসে থেকে লাভ নেই। মাসেদুলের নারিকেলগাছ প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় নামতে হবে।
১২ জুন কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিল পদে ৫৮ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা যুবলীগের কয়েক সদস্য জানান, ২০২৮ সালের ২৯ মে কাউন্সিলরের গোপন ভোটে সোহেল আহমদ বাহাদুর সভাপতি ও শহিদুল হক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১০১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা যুবলীগের কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠানো হলেও গত তিন বছরে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
মেয়র প্রার্থী মাসেদুল হক বলেন, ‘নারিকেলগাছের গণজোয়ার দেখে অনেকের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম মোজাম্মেল হক জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন। কক্সবাজার পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। কিন্তু দলের মনোনয়ন অযোগ্য ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়ায় আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। দলের পদবির চাইতে বাবার আদর্শই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’