
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই সনদ হতে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।’
এনসিপির পদযাত্রার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ী রোডে পথসভায় এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র হতেই হবে। এর বিকল্প আমরা দেখতে চাই না।’ তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে ঐকমত্য হতে হবে।

নব্বইয়ের গণ–অভ্যুত্থানের সময় ‘তিন জোটের রূপরেখা’ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা এবার কোনো প্রতারণার সুযোগ দেবেন না। তাঁরা আশা করছেন, ৫ আগস্টের আগেই জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া সম্ভব হবে। সবাই মিলে গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর উদ্যাপন করতে পারবেন।
পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ্ আল মুহিম, মো. মহসিন উদ্দিনসহ গাজীপুরের স্থানীয় নেতারা।
পথসভাকে সামনে রেখে মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজবাড়ীর সড়কে বন্ধ করে সব ধরনের যান চলাচল।
এর আগে নাহিদ ইসলামসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা টাঙ্গাইলের পথসভা শেষে গাজীপুরে কালিয়াকৈরে উপজেলা হয়ে শ্রীপুরের মাওনায় যান। সেখান থেকে গাজীপুর শহরের রাজবাড়ীতে আসেন তাঁরা।
‘আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘গাজীপুরে সন্ত্রাসীরা টহল দিচ্ছে। মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ভেবেছে, ভয় দেখিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও গণ–অভ্যুত্থানের শক্তিকে রুখে দেবে। গোপালগঞ্জেও আমাদের বাধা দিয়ে রাখা যায় নাই। আমরা গোপালগঞ্জের মাটিতে গিয়েছি, গাজীপুরেও এসেছি।’
গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ফ্লাইওভারের নিচে এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার বিকেলে এই দোয়া মাহফিল হয়।
নাহিদ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘গাজীপুরে এসেই প্রথমে আন্দোলনের হটস্পট মাওনায় এসেছি। এখানে ১৯ জন ভাই, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আপনারা মাওনাবাসী এই জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলেন, ছাত্রজনতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, নতুন দেশ বিনির্মাণে রাজপথে নেমেছিলেন, আমরা আপনাদের জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা ও লাল সালাম।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই। আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য লড়াই চলমান আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আমরা যাব। আমরা ঘোষণা করেছি যে বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি থেকে মুজিববাদকে বিতাড়িত করব।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে এই মাওনায় ১৯ জন বীর শহীদ হয়েছেন। চব্বিশের অভ্যুত্থানের রণক্ষেত্র, বীর শহীদদের রণক্ষেত্র এই মাওনা। আমাদের আলাদা পথসভা না থাকলেও আমরা শুধু আমাদের বীর শহীদদের জন্য দোয়া করতে অভ্যুত্থানের রণক্ষেত্র এই মাওনায় এসে উপস্থিত হয়েছি।’