জি এম কাদেরকে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করল জাপা

0
133
জি এম কাদের।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি (জাপা) তাদের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করেছে। একই সঙ্গে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে সংসদীয় দলের উপনেতা এবং দলের মহাসচিব মুজিবুল হককে (চুন্নু) সংসদীয় দলের চিফ হুইপ নির্বাচিত করা হয়েছে। জাপার নেতারা বলছেন, তারা এ সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে স্পিকারকে জানাবেন।

আজ বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় উপনেতার কার্যালয়ে জাপার সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাপা সূত্রে জানা গেছে, সভায় সংসদীয় দলের নেতা, উপনেতা ও চিফ হুইপ নির্বাচিত করা হয়। সন্ধ্যার পর জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে

এর আগে বিকেলে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক বলেছিলেন, জাপার সংসদীয় দলের প্রথম সভা ছিল আজ। সভায় জাপার নির্বাচিত ১১ সংসদ সদস্যের মধ্যে ১০ জন অংশ নেন। তারা এ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিরোধীদলীয় নেতা, উপনেতা ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মনোনীত করেন। আগামী রোববার তাদের সংসদীয় দলের এ প্রস্তাব স্পিকারকে লিখিতভাবে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে মুজিবুল হক আরও বলেন, ‘নৈতিকতার দিক থেকে দেখলে সংসদে বিরোধী দল জাপা। যাঁরা স্বতন্ত্র হয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে আছেন। তারা পদ ছেড়ে এসে জোট করবেন কি না, সেটা নিশ্চিত নয়। আর করলেও সেটার কতটা নৈতিক ও আইনি ভিত্তি থাকবে, তা স্পিকার দেখবেন। আমরা বিশ্বাস করি, স্পিকার জাতীয় পার্টিকেই বিরোধী দল হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন।’

কিছুক্ষণ পরই মহাসচিবের ওই বক্তব্য নাকচ করে জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীর স্বাক্ষরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, বেশ কিছু গণমাধ্যম তাদের সংবাদে জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টির নেতাদের বিরোধীদলীয় নেতা, উপনেতা ও চিফ হুইপ হিসেবে উল্লেখ করেছে। আসলে এটি ভুল ও তথ্যবিভ্রাট।’

নিজেদের সংসদীয় দলের নেতা, উপনেতা ও চিফ হুইপ নির্বাচিত করার কথা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, উপনেতা ও চিফ হুইপের নাম ঘোষণা করার এখতিয়ার মাননীয় স্পিকারের।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মাত্র ১১টি আসনে জয়লাভ করে। এই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের পর সবচেয়ে বেশি ৬২টি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা ব্যক্তিরা। তারা মিলে জোটবদ্ধ (গ্রুপ) হলে তারাই হবে প্রধান বিরোধী দল এবং তাদের একজন হবেন বিরোধীদলীয় নেতা। আর যদি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা জোটবদ্ধ না হন, তাহলে একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিই আবার প্রধান বিরোধী দল হবে।

জাতীয় সংসদে সরকারের বিরোধিতাকারী দলগুলো বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত। বিরোধী দল হতে হলে ন্যূনতম কতজন সংসদ সদস্য থাকতে হবে, সেটি আইন বা জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে উল্লেখ নেই। তবে বিরোধী দলের নেতা কে হবেন, তা উল্লেখ আছে। কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী, ‘বিরোধী দলের নেতা অর্থ স্পিকারের বিবেচনামতে যে সংসদ সদস্য সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চসংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত ক্ষেত্রমতো দল বা অধিসংঘের নেতা।’

৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ওই অধিবেশনেই সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। ৩০ জানুয়ারির আগেই বিরোধী দলের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.