ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে গাজীপুরের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তাকে শুভেচ্ছা জানাতে শুক্রবার ভোর থেকে শহরের ছয়দানা এলাকার বাড়িতে ভিড় করেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদা খাতুন বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। আমি খুব খুশি। এ জয় আমি প্রধানমন্ত্রী ও গাজীপুরের সব জনগণকে উপহার দিলাম।
তিনি আরও বলেন, গাজীপুরের সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, ৪৮০ ভোটকেন্দ্রে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়েছেন। নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। জায়েদা খাতুন ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়েছেন। ইসলামী আন্দোলনের গাজী আতাউর রহমান ৪৫ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। ভোট দিয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোটার। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম এই ফল ঘোষণা করেন।
বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করে ২০২১ সালে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হন জাহাঙ্গীর। আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার হন। চলতি বছরেই সাধারণ ক্ষমায় দলে ফেরেন। কিন্তু মেয়র পদে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে আবার আজীবনের জন্য বহিষ্কার হন আওয়ামী লীগ থেকে। কিন্তু ঋণখেলাপির কারণে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। ভোট করতে পারবেন না আশঙ্কায় মা জায়েদা খাতুনকেও প্রার্থী করেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর।
পুরো নির্বাচনী প্রচারে ছেলের ছায়া হয়েছিলেন জায়েদা। মা কাগজকলমে প্রার্থী হলেও বাস্তবে ভোটে লড়েছেন ছেলে। ফলে তার জয় আদতে জাহাঙ্গীরের বিজয়। ক্ষমতাসীন দলের সর্বাত্মক সমর্থন পেয়েও আজমত উল্লার মতো শক্তিশালী প্রার্থী গৃহিণী জায়েদার বিরুদ্ধে হেরে যাবেন, তা কেউ ধারণাই করতে পারেননি। কিন্তু সুষ্ঠু ভোটে সব হিসাব পাল্টে গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফল ঘোষণার সময় আসেননি জায়েদা খাতুনও। জাহাঙ্গীরকে ঘিরেই মধ্যরাতে বিজয় উল্লাসে মাতেন সমর্থকরা। তখনও দেখা মেলেনি জায়েদার। ফলে জায়েদা মেয়র নির্বাচিত হলেও গাজীপুরের চাবি থাকছে জাহাঙ্গীরের হাতেই।