জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে চার সাংবাদিকসহ অন্তত ৮০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা শেষে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ সিন্ডিকেট সদস্যদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৫ জুলাই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ কর্তৃক অতর্কিত হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত হল বন্ধ ঘোষণা করা যাবে না। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার ভবনের দুই পাশের গেটে তালা মেরে রাখেন। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবন অবরোধ করে রাখবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রথমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করলেও বিকেল ৫টার দিকে তাদের উপর অতর্কিত গুলি চালায়। এতে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে।
সংঘর্ষে পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহতদের পরিবহনে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনার ছবি ধারণ করতে গেলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় তিন সাংবাদিককে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেশ রূপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আত্তাবুজ্জামান ফরহাদ এবং বার্তা ২৪-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান আহত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর শরীরে রাবার বুলেটের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জাবিতে পুলিশ-আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ৮০ আন্দোলনকারীরা নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে ভাঙচুর চালিয়েছে। তাদেরকে বারবার বলার পরেও তারা শুনছিল না, উল্টো ধীরে ধীরে তারা জনবল বাড়াচ্ছিল। তাই তাদের ছত্রভঙ্গ করতে যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করেছি। ভিসি স্যারকে আমরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছি।’