আগামী জানুয়ারির পর দেশে আর ডলার সংকট থাকবে না বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আব্দুর রউফ তালুকদার। আমদানি ব্যয়ের চেয়ে রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণ বিষয়ক দিনব্যাপী জাতীয় এক সেমিনারের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার এই কথা বলেন গভর্নর। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) আওতায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, ইআরডি সচিব শরিফা খান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিবিসিইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এতে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে গভর্নর বলেন, অনুসন্ধানে তারা দেখেছেন এ বছরের শুরুর দিকে আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকহারে বেড়ে ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। এ বিষয়ে সতর্কতা এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর আমদানি কমে ৫০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। যা মূলত স্বাভাবিক আমদানি চিত্র।
তিনি বলেন, কোনো কোনো পণ্য আমদানিতে ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েসিং (প্রকৃত দরের তুলনায় অতিরিক্ত দর দেখানো) দেখানো হয়েছে। এ কারণে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিং (প্রকৃত দরের চেয়ে বেশি দেখানো ) রোধে কাজ করছেন তারা। যাতে মুদ্রা পাচার এবং রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের বিষয়ে গভর্নর বলেন, আমদানি পর্যায়ে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে কিছু কিছু সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। এলসির মূল্য এবং বাজারে প্রকৃত মূল্যের মধ্যে ব্যবধান পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। বিদেশি মুদ্রা পাচার রোধে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে ডলার সংকটে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমছেই। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। অথচ গত বছরের আগস্টে যেখানে রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে।
রিজার্ভ কমে আসায় তৈরি হওয়া সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। এছাড়া বিশ্বব্যাংক এবং জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা থেকেও ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।