জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ ৯টি পদে জয়লাভ করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম মনোনীত আওয়ামী লীগ প্যানেলের প্রার্থীরা।
কার্যনির্বাহী পরিষদের ১৭টি পদের মধ্যে ৭টিতে জিতেছেন বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। সিনিয়র সহ-সভাপতি একজন এবং ৬ জন সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে। এছাড়া সদস্য পদে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে ইত্তেফাকের ফরিদা ইয়াসমিন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত নির্বাচিত হয়েছেন। ফরিদা ইয়াসমিন এ পদে পুনর্নির্বাচিত হলেন।
শনিবার রাত ৮টার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা-ই-জামিল। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ফরিদা ইয়াসমিন পেয়েছেন ৫৬৭ ভোট। বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বাসসের কামাল উদ্দিন সবুজ পেয়েছেন ৪০১ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে শ্যামল দত্ত পেয়েছেন ৪৯৬ ভোট। বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমার দেশের ইলিয়াস খান পেয়েছেন ৪৭৪ ভোট।
অন্যান্য পদে বিজয়ীরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ (৫৫৯ ভোট), সহ-সভাপতি রেজোয়ানুল হক রাজা (৫৮৩ ভোট), যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া (৫৪০ ভোট) ও আশরাফ আলী (৪৯১ ভোট) এবং কোষাধ্যক্ষ সমকালের নগর সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী (৫৭৬ ভোট)। তাদের মধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী।
এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- ফরিদ হোসেন (৪৯৫), কাজী রওনাক হোসেন (৪২২), শাহনাজ সিদ্দীকি সোমা (৩৯০), কল্যাণ সাহা (৩৮২), শাহনাজ বেগম পলি (৩৬০), সৈয়দ আবদাল আহমদ (৩৪৭), জুলহাস আলম (৩৪৫), বখতিয়ার রাণা (৩৩০), মোহাম্মদ মোমিন হোসেন (৩৩০), সীমান্ত খোকন (২৮৯)।
এই ১০টি সদস্য পদের তিনটিতে জিতেছেন ফরিদা-শ্যামল দত্ত পরিষদের প্রার্থী। তারা হলেন- ফরিদ হোসেন, শাহনাজ সিদ্দীকি সোমা ও কল্যাণ সাহা। এ পদে অপর ছয়জন বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী।
আর স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থী মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ঢাকার ব্যুরোপ্রধান জুলহাস আলম।
নির্বাচনে বিজয়ী ফরিদা ইয়াসমিন-শ্যামল দত্ত পরিষদের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন
ফল ঘোষণার পর ফরিদা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে বিজয়ীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ক্লাব সদস্যদের উদ্দেশে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ক্লাবের ২ দশমিক ৬ একর জমিতে ২১ তলা অত্যাধুনিক বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে এই কমপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে ডিপিপি (ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল) চূড়ান্ত করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। শিগগিরই নির্মাণকাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্মাণকাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১ হাজার ১০২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দেন ৯৮৫ জন। আট সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন জাফর ইকবাল, এস এ এম শওকত হোসেন, মিনার মনসুর, গৌতম অরিন্দম বড়ুয়া (শেলু বড়ুয়া), শামীমা চৌধুরী, মো. মনিরুজ্জামান ও নবনীতা চৌধুরী।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী পরিষদের মোট ১৭টি পদে ৪৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বরাবরের মতো এবারও দুটি প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুটি প্যানেলে ৩৪ জন এবং কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য পদে ১১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম মনোনীত আওয়ামী লীগ প্যানেলের নেতৃত্ব দেন ইত্তেফাকের ফরিদা ইয়াসমিন ও ভোরের কাগজের শ্যামল দত্ত। অন্যদিকে বিএনপির ফোরাম মনোনীত প্যানেলের নেতৃত্ব দেন সভাপতি পদে বাসসের কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আমার দেশের ইলিয়াস খান।