উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তার অংশ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বছরে ১০ হাজার কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এসব অর্থ কোথায় ব্যয় হয়, এ নিয়ে ১ জুন একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বাংলাদেশও জলবায়ু অর্থায়ন নামের এই তহবিল থেকে ঋণ ও অনুদানের পাশাপাশি অন্যান্য সহায়তা পেয়ে থাকে। প্রতিশ্রুত এই তহবিল থেকে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল নাগাদ ৯০০ কোটি ডলার সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। এই অর্থের মধ্যে মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাপান থেকে পাওয়া ২৪০ কোটি ডলারের ঋণও রয়েছে।
জাপান যখন প্রায় এক দশক আগে বাংলাদেশকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তায় এগিয়ে আসে, তখন দেশে দৈনিক বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল দুই হাজার মেগাওয়াট, যা দৈনিক চাহিদার এক-তৃতীয়াংশের বেশি। অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে তখন বিক্ষোভ হয় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ব্যাহত হয়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিদ্যুৎ বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বিদ্যুৎ–স্বল্পতার কারণে বর্তমানে পরিকল্পিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হলে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এই প্রকল্পের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে সহযোগিতা করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সংস্থাটির নথিতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বছরে ৬৮ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত হবে। এটার পরিমাণ ২০১৯ সালের পুরো সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর থেকে নিঃসরিত গ্যাসের চেয়ে বেশি।
জাইকার মুখপাত্র সাচিকো তাকেদা বলেন, মাতারবাড়ী প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জাপান কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে। কারণ, জাপান এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যাতে কম কয়লা পুড়িয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এখানে কয়লাভিত্তিক অন্যান্য সাধারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম গ্যাস নিঃসরিত হবে।
জাইকার নথিপত্রে বলা হয়, ঠিক একই ধরনের একটি সাধারণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বছরে যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরিত হয়, মাতারবাড়ীতে সে তুলনায় চার লাখ টন কম গ্যাস নিঃসরিত হবে।
তাকেদা আরও বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে জাতিসংঘকে জানানোর দায়িত্ব জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, জাইকার নয়।