ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গিকে বড় অঙ্কের টাকা দেন মেহেদী: সিটিটিসি

0
197
জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি। ছবি- সংগৃহীত

পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে পুরান ঢাকার আদালত এলাকায় এসেছিলেন। এই টাকা তিনি ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গিদের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন।

সিটিটিসি বলছে, গত ২০ নভেম্বর পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মেহেদী সরাসরি জড়িত ছিলেন। তাকে বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ঘটনার দিন মেহেদী বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে আদালত এলাকায় আসেন। তিনি আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন, ছিনিয়ে নেওয়ার পর জঙ্গিদের হাতে টাকা তুলে দেবেন, যাতে তারা পরে খরচ চালাতে পারেন। সুযোগ বুঝে আদালত এলাকায় তিনি এই টাকা জঙ্গিদের হাতে টাকা তুলে দেন।

আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার মেহেদী আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদী বলেছেন, সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল চার জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, মেহেদী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারও দণ্ডিত জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। যখন জঙ্গিদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হতো, তখন তাদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতেন। তাদের সংগঠনের পরিকল্পনার কথা জানাতেন। দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় মেহেদী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এর আগে মেহেদী হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ২০১০ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তিনি জামিনে বেরিয়ে যান। ২০১৩ সালে তিনি আনসার আল ইসলামের যোগ দেন। মেহেদীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর ও বাড্ডা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তিনটি মামলা হয়। এছাড়া ২০১০ ও ২০১২ সালে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দুটি মামলা হয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গির অবস্থান সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর পুলিশকে মারধর ও চোখে পিপার স্প্রে করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফটক থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে তাদের সহযোগীরা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার দিন ওই দুজনসহ ১২ আসামিকে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল।

ছিনিয়ে নেওয়া ওই দুই জঙ্গি হলেন মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.