
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ ও মনোনয়নপত্র উত্তোলনের সময় বাড়ানো নিয়ে সোমবার রাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
সংগঠনটি বলেছে, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) নেই বলে ছাত্রদলের অভিযোগ ডাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। এমন বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ওপর একধরনের চাপ তৈরি করা হচ্ছে, যা সত্যিকার অর্থে ডাকসুর ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নষ্ট করার পরিস্থিতি তৈরি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পায়রা চত্বরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবদুল কাদের লিখিত বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
আবদুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা আর প্রত্যাশার ডাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণ বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিচ্ছে। আমরা এ ধরনের প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেন। এতে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। এখানে সুস্পষ্ট আচরণবিধি ভঙ্গ হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধকে ‘মব’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে, যেটিকে সুস্পষ্টভাবে গণতান্ত্রিক অধিকারের হরণ মনে করছেন তাঁরা।
সংগঠনটি মনে করছে, এ ধরনের আচরণ জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের ধারা তৈরি হয়েছে, সেটিকে ধ্বংস করে। ফজিলাতুন্নেছা হলের এ ঘটনাকে ‘লাঞ্ছনা’ হিসেবে চিহ্নিত করার মাধ্যমে প্রতিরোধকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ এটিকে সুস্পষ্ট প্রহসন হিসেবে দেখে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে আচরণবিধি উল্লেখ থাকলেও ছাত্রদলের জসীমউদ্দীন হলের আহ্বায়ক তানভীর বারী হামিম মিছিল, স্লোগানসহ প্রবেশ করেন। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও উল্লেখ করেন আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক আশ্চর্য নীরবতা লক্ষ করছি। এটা ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে কাদের আরও বলেন, যথেষ্ট সময় দেওয়ার পরও আজ শেষ মুহূর্তে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য আরও এক দিন সময় বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ফজিলাতুন্নেছা হলে হওয়া নিয়মভঙ্গকে উৎসাহিত করা হচ্ছে ও বৈধতা উৎপাদন করা হচ্ছে। এ কর্মকাণ্ডকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ডাকসু নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক ও ডাকসুর জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার, সংগঠনের মুখপাত্র ও এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুন, সদস্যসচিব জাহিদ আহসান।
আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণের সময় এক দিন করে বাড়ানো হয়েছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।