ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।
যদিও ইতোমধ্যে মতিউরের দেশ ছেড়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। তার বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি। এমনকি কোরবানির ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি আর অফিসে আসেননি।
মতিউরের ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, রোববার (২২ জুন) বিকেলের দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর ভারতে পালিয়ে গেছেন। সেখান থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছে।
শুধু মতিউর রহমান নয়, তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলী, ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানও দেশত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, মতিউরকে এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হারিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদও।
সব হারানোর পেছনে রয়েছে মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইফাতের ‘ছাগলকাণ্ড’। একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলের বিপুল পরিমাণ টাকায় গরু-ছাগল কেনা নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মতিউর রহমান দাবি করেন, ইফাত তার ছেলে নন। এমনকি এই তরুণ তার পরিচিতও নয়। এই ঘটনার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে মতিউর রহমানের বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসে। ইতোমধ্যে তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধানে ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় মতিউরের নামে বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
জানা গেছে, মতিউরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে শতকোটি টাকা। তার অবৈধ সম্পদের খোঁজে নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। এ দম্পতির মেয়ে ফারজানা রহমান ইস্পিতা ও ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।