চালের বাজারে শক্তিশালী সিন্ডিকেট, কেজিতে দাম বাড়ল ৫-৭ টাকা

0
126
চালের বাজার

বোরো মৌসুমে ধান কাটার ভরা সময় হলেও রাজধানীসহ সারা দেশে হঠাৎ করে বেড়েছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। এতে চাপে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তারা।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে মোটা চাল (ইরি/স্বর্ণা) বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি মানের পাইজাম বা লতা ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা ও সরু চাল (নাজিরশাইল/মিনিকেট) বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮২ টাকা কেজি দরে। যা সপ্তাহখানেক আগের তুলনায় দুই থেকে সাত টাকা বেশি।

উত্তরাঞ্চলের বড় মোকাম বগুড়ার শেরপুরে গত দুই সপ্তাহে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। শেরপুরের আইয়ুব আলী নামে একজন রাইস মিলের মালিক বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ায় চাতালে ধান শুকানো যাচ্ছে না। এ কারণে চাল উৎপাদন কমছে। একই সঙ্গে করপোরেট কোম্পানিগুলো বড় পরিসরে ধান কিনে মজুত করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও মজুত শুরু করেছে।’

দেশের অন্যতম ধান-চাল উৎপাদন এলাকা নওগাঁয় এক সপ্তাহে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে তিন থেকে আট টাকা। স্থানীয় খুচরা বাজারে জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭০–৭২ টাকা, কাটারি ৭৫–৮০ টাকা, শুভলতা ৬২–৬৪ টাকা, ব্রি–২৮ চাল ৬৫–৬৬ টাকা এবং স্বর্ণা–৫ চাল ৫৮–৬০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগেও এসব চাল ছিল পাঁচ থেকে আট টাকা কম।

নওগাঁর চালকল মালিকরা বলছেন, কৃষকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দিয়ে ধান কিনতে হচ্ছে। এ কারণে চালের দাম বেড়েছে। তবে মিলাররা অভিযোগ করছেন, বড় বড় ব্র্যান্ডেড কোম্পানিগুলো—যেমন এসিআই, রূপচাঁদা, আকিজ, স্বপ্ন, প্রাণ ইত্যাদি—মাঠ থেকে বিপুল পরিমাণ ধান ও চাল কিনে নিজেদের গুদামে মজুত করছে।

চালবাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ধান কিনে হাজার টন মজুত করছেন। এতে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে।’ তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনার দাবি জানান।

পাইকারি ব্যবসায়ীরাও বলছেন, সরকারের মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা না করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী ও করপোরেট গোষ্ঠী বাজার থেকে অর্ধেকের বেশি ধান কিনে নিয়েছে। সাধারণ মিলারদের হাতে এখন ধান খুবই কম।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারিভাবে নজরদারি ও অভিযান না থাকায় মিলার ও মজুতদারদের ‘সিন্ডিকেট’ চালের বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলেও এখনও মাঠপর্যায়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.