চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই সাময়িক বরখাস্ত

0
18
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামানকে গতকাল রোববার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, ছবি: থানার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল রোববার ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলালকে সাময়িক বরখাস্ত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। কলাবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াদুদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে ডিএমপি সূত্র জানায়।

আবদুল ওয়াদুদ ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল রাতে তাঁর বাসায় কলাবাগান থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে অর্থ আদায় করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি চাঁদাবাজির পাশাপাশি বাসায় ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনার সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন আবদুল ওয়াদুদ। পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ডিএমপির কমিশনারের কাছে আবেদন জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ সোমবার দুপুরের দিকে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তাঁদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁরা সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ এপ্রিল কলাবাগানের একটি বাসায় ‘মবের’ ঘটনা ঘটেছিল। সেটা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযোগকারী ব্যক্তির বাসায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাতায়াত করতেন। তাই তাঁর বাসায় স্থানীয় লোকজন ও কলাবাগান থানার পুলিশ গিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন বাসায় ভাঙচুর চালান। কলাবাগান থানার ওসি ওই বাসার মালিককে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।

আবদুল ওয়াদুদ তাঁর অভিযোগে বলেন, ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও অন্তত ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর বাসায় জোর করে ঢুকে পড়েন। তাঁর ম্যানেজার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। তবে কলাবাগান থানার ওসি (মোক্তারুজ্জামান) নিজে উপস্থিত থেকে অন্য থানার পুলিশের টিমকে চলে যেতে বলেন। এ সময় লাল মিয়া নামের এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটে ও নাইটগার্ড লুৎফরকে নিজেদের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন ওসি। পুরো ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা চলাকালে তিনি ওসিকে ফোনে সহায়তা চাইলে তাঁকে (আবদুল ওয়াদুদ) থানায় যেতে বলা হয়। তিনি দরজা খুললে পুলিশসদস্যরা তাঁকে ঘরের ভেতরে টেনে নেন। তাঁর কাছে অস্ত্র ও টাকা কোথায় আছে, তা জানতে চাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশসদস্য মান্নান তাঁকে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিলে থানায় যেতে হবে না। পরে দেনদরবার করে তিনি বাধ্য হয়ে দুই লাখ টাকা দেন। ব্যাংক খুললে বাকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। রাতভর অভিযানে পুলিশসদস্যরা তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপ, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক, কম্পিউটারসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে যান। পরে ওসি একটি ল্যাপটপ ফেরত দেন। বাকি কোনো কিছুই তিনি ফেরত পাননি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.