চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ কার্যক্রম শেষ মুহূর্তে আটকে আছে এক প্রার্থীর রিটের কারণে। রিটের পর নিয়োগে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। রিটের জবাবও প্রস্তুত করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কিন্তু আদালতে শুনানি না হওয়ায় নিয়োগ দিতে পারছে না এনটিআরসিএ।
আজ রোববার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিআরসিএর একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নিয়োগ কার্যক্রম সব গুছিয়ে নিয়েছি। ভেরিফিকেশন চলমান রেখেই নিয়োগ দিতাম। কিন্তু এক প্রার্থীর রিটের কারণে সব থমকে আছে। নিয়োগপ্রার্থীদের মতো আমরাও আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি।’
কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রিটের দ্রুত শুনানির জন্য এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে চেম্বার জজের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এখন আমরা আদালতের আদেশের অপেক্ষায় আছি। যেহেতু আদালত ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন, তাই শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই। যেহেতু এটি অনেক বড় নিয়োগ এবং স্কুল ও কলেজে অনেক শিক্ষক পদ শূন্য। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আদালত দ্রুত আদেশ দেবেন বলে আশা করছি।’
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমরা ৪ সেপ্টেম্বর আমাদের চূড়ান্ত সুপারিশের জন্য এনটিআরসিএ অফিসে যাই। তখন আমাদের বলা হয়েছিল মামলা জটিলতা কেটে গেলে চূড়ান্ত সুপারিশ দেবে। চূড়ান্ত সুপারিশ না পাওয়ায় আমরা প্রতিনিয়ত সামাজিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছি। দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ না পেলে প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্তরা আবার এনটিআরসিএর সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।’
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের কর্মস্থলে যোগদান সহজ ও দ্রুত করতে এনটিআরসিএ অনলাইন ভেরিফিকেশন চালু করে। ইতিমধ্যে ভি-রোল ফরম পূরণ শেষও হয়ে গেছে। কিন্তু নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা দ্রুত যোগদান চান। এ জন্য দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ নিয়ে যোগদানের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করছেন প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তরা। ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করছেন তাঁরা। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত সুপারিশের দাবি জানিয়ে তাঁরা বলছেন, প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়ার কয়েক মাস পার হলেও চূড়ান্ত সুপারিশ করা হচ্ছে না। এনটিআরসিএ কালক্ষেপণ করছে। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুরবস্থায় সময় পার করছেন তাঁরা। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তির দাবি জানান তাঁরা।
১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ২৩ মে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ওই বছরেরই ৩০ আগস্ট, ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৫ ও ১৬ নভেম্বর। সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কথা থাকলেও তা প্রকাশ করা হয় এক বছর পর ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক বছরের বেশি সময় পর ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর ১৬তম নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।