ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৬টি হরিণ এবং ৪টি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জীবিত ১৮টি হরিণ ও ১টি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে আজ সকাল পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে ৫৪টি হরিণ ও ২টি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মিহির কুমার দো বলেন, আজ সারা দিন সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলারচর, নীলকমল ও নারিকেলবাড়িয়া এলাকায় মৃত বন্য প্রাণীগুলো পাওয়া গেছে। মৃত বন্য প্রাণীগুলোকে কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৮টি জীবিত হরিণ ও ১টি অজগর উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র জানায়, রিমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিঠাপানির শতাধিক পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে। বন বিভাগের অবকাঠামোগত প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
সুন্দরবনে কর্মরত বনকর্মীরা জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। পানির কারণে বন্য প্রাণী দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। বিশেষত সুন্দরবনের গহিনে চলে যাওয়ায় হরিণগুলো ভেসে গিয়ে সাঁতরে কূলে উঠতে পারেনি। এ কারণে হরিণগুলো মারা যেতে পারে। মূলত জলোচ্ছ্বাসের কারণেই বন্য প্রাণীগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে বন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।