গাজী টায়ার্সের ভবনে ঢুকে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো খুবই বিপজ্জনক

বুয়েটের বিশেষজ্ঞ মতামত

0
39
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রাকিব হাসান (মাঝে) অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গাজী টায়ার্সের ভবন পরিদর্শন করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ গাজী টায়ার্সের ছয়তলা ভবনটিতে প্রবেশ করে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মত দিয়েছেন বুয়েটের বিশেষজ্ঞ।
 
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভবনটি পরিদর্শন শেষে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রাকিব হাসান এমন মত দেন। এর ফলে এখনই হতাহতের খোঁজে সম্পূর্ণ ভবনে অনুসন্ধান চালাচ্ছে না ফায়ার সার্ভিস। তারা ভবনটির বেজমেন্টে অনুসন্ধান চালাবে।
 
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের আহ্বানে আজ সকাল নয়টায় ভবন পরিদর্শনে আসেন অধ্যাপক রাকিব হাসান। এ সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত দলের প্রধান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ছাইফুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ারুল হকসহ তদন্ত দলের সদস্যরা ভবনটি পর্যবেক্ষণ করেন। পরে অধ্যাপক রাকিব হাসান তাঁর মতামত জানান।
 
অধ্যাপক রাকিব হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবনের চারপাশ ঘুরে দেখেছি। ফায়ার সার্ভিসের ল্যাডারের (মই) সাহায্যে যতটা সম্ভব বাইরে থেকে ভবনের ভেতরে দেখেছি। ড্রোনের সাহায্যে ধারণ করা ভিডিও ও ছবি পর্যবেক্ষণ করেছি। আগুনটা আসলে অনেকক্ষণ সময় ধরে প্রায় তিন দিনের মতো জ্বলেছে। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকায় তাপও অনেক বেশি হয়েছে, যা ভবনটির অবস্থা দেখলে বোঝা যায়। ভবনটি শুধু পুড়ে যায়নি, পুড়ে ভেঙে গেছে। রডগুলো বেরিয়ে গেছে। ছয়তলা ভবনটির চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার মেঝে ভেঙে তৃতীয় তলার মেঝেতে পড়ে গেছে। ভাঙা অংশগুলোর ওজনে তৃতীয় তলাও বেঁকে গেছে। কলামগুলো বেশির ভাগ ফেটে গেছে। এ ফাটল আমরা বাইরে থেকে যতটা দেখতে পাই, আগুন লাগার ফলে ভেতরটাতেও ততটাই ফাটল থাকে। ওপরের দিকে আগুন বেশি জ্বলায় সেখানে ক্ষতি বেশি হয়েছে। এখন নিচের দিকে উদ্ধার অভিযান চালানোর চেষ্টা করা হলে ওপর থেকে ভেঙে পড়ার শঙ্কাও রয়েছে।’
 
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা চারতলা পর্যন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে দেখেছি, ড্রোন ও টার্ন টেবিল ল্যাডার দিয়ে ছাদসহ পুরো ভবন দেখেছি। চার, পাঁচ ও ছয়তলার ফ্লোর ভেঙে তিনতলায় পড়েছে। তিনতলার ফ্লোর বাঁকা হয়ে গেছে। খালি চোখে যতটুকু দেখা গেছে, তাতে কোনো হতাহত আমাদের চোখে পড়েনি। প্রতিটি ফ্লোরের রড বের হয়ে গেছে, কলাম ফুলে গেছে, বিম বাঁকা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ চালানোর সুযোগ নেই। আজকে আমরা ভবনের বেজমেন্টে অনুসন্ধান চালাব। সেখানে কোনো লোক আটকে আছে কি না, তা দেখব।’
 
বেলা ১১টায় বুয়েটের বিশেষজ্ঞসহ তদন্ত দল কারখানা থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় পঞ্চম দিনের মতো নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে আসা স্বজনেরা কারখানার বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লম্বা সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের অক্ষত লাশ পাওয়ার আসা ছেড়ে দিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.