গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের একটি প্রস্তাবও বাস্তবায়ন হয়নি: কামাল আহমেদ

0
19
দেশের সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। আজ শনিবার দুপুরে, রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৯ মাসেও কোনো সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। তিনি বলেন ‘আমাদের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের যেসব প্রস্তাব, তার একটি প্রস্তাবও এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে, এমন কথা আমি বলতে পারছি না। এ জন্য আমি দুঃখিত।’

আজ শনিবার রাজধানীয় সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দেশের সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কামাল আহমেদ এ কথা বলেন। তিনি বর্তমানে দ্য ডেইলি স্টারের কলসাল্টিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হিসেবে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় কামাল আহমেদ উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘তাঁর (সৈয়দা রিজওয়ানা) ঘাড়ে হয়তো দোষ চাপানো যাবে না; কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে তো দোষ চাপানো যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার যে কিছুই করেনি, এটাই হচ্ছে সত্য।’

কামাল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা গত ২২ মার্চ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে (সরকারের কাছে মানে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে) দিয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টা তখন আমাদের বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে আশু বাস্তবায়নযোগ্যর একটি আলাদা তালিকা করে দেন। তাহলে আমরা সেগুলো অচিরেই বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেব। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই তালিকা করে তাঁর কাছে দিয়ে এসেছিলাম। তিনি সেটি বাস্তবায়নের জন্য কয়েকবার নির্দেশ দিয়েছেন বলে শুনেছি; কিন্তু কিছুই হয়নি।’

কামাল আহমেদ আরও বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মাঝখানে খুব ব্যস্ততা দেখিয়েছেন, এই সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। সে কাজটি কী হয়েছে—কাজটি হয়েছে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর আর বিভাগের কাছে মতামতের জন্য পাঠিয়েছে। তারা নানান মতামত দিয়েছে। মতামত হচ্ছে, এগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে না।’

বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান করার সুপারিশের কথা উল্লেখ করে কামাল আহমেদ বলেন, সেই উদ্যোগও সরকার নিতে পারেনি।

কামাল আহমেদ বলেন, উপদেষ্টাদের নিয়ে দুবার দুটি কমিটি করা হলো। একবার শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরারকে (সি আর আবরার) আহ্বায়ক করে। আরেকবার পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে। ফলাফল হচ্ছে—কিছু করা যাবে না।

‘এখন আর সময়ও নেই’ উল্লেখ করে কামাল আহমেদ বলেন, ‘এটা হচ্ছে হতাশা ও ক্ষোভের কারণ। চাইলে সরকার করতে পারত, অন্তত এক কুড়ি সুপারিশ শুধু একটা নির্দেশনা জারি করেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল।’

সাংবাদিক শাহনাজ শারমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিজেসির উপদেষ্টা খায়রুল আনোয়ার, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজেসির ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের এ দেশীয় প্রতিনিধি মো. আল মামুন, সাংবাদিক তালাত মামুন, ইলিয়াস হোসেন, মিল্টন আনোয়ার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.