গণতন্ত্র থাকলে দুর্নীতির প্রবণতা কমে

0
208
আলোচনা সভায় বক্তারা

আজ রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে তিন দিনব্যাপী বঙ্গোপসাগর সংলাপের দ্বিতীয় দিনের এক অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘উন্নয়ন বনাম গণতন্ত্র: উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথনকশা’ শীর্ষক অধিবেশন সঞ্চালনা করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

অধিবেশনে অংশ নিয়ে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্টের সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জোভান রাতকোভিচ বলেন, উন্নয়ন গণতন্ত্রের অনুষঙ্গ। গণতান্ত্রিক দেশ গরিব হলেও সেখানে দুর্নীতির প্রবণতা থাকে কম, সেই দেশ সাধারণত বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়ে না। এমনকি এসব দেশের অর্থনৈতিক সংকোচন হওয়ার সম্ভাবনাও গরিব স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তুলনায় দ্বিগুণ কম। অনেক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তিনি বলেন, গরিব গণতান্ত্রিক দেশগুলো গরিব স্বৈরতান্ত্রিক দেশের চেয়ে ভালো করছে। মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দেওয়া এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার দিক থেকে গরিব গণতান্ত্রিক দেশগুলো এগিয়ে। এই দেশগুলোর মানুষের জীবন যাপনের মানও অনেক উন্নত।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হয় না। এমনকি উত্তর কোরিয়াও বলে যে তারা গণতান্ত্রিক। কিন্তু অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো দেশে গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে সেখানে অধিক উন্নয়ন হয়। ফলে উত্তর কোরিয়ার গণতন্ত্রের অবস্থা কী, তা সহজেই অনুমেয়।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে দর্শকদের সারি থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করা হয়, একসময় সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু আয় প্রায় সমান ছিল, এমনকি দক্ষিণ কোরিয়া দীর্ঘ সময় সামরিক শাসনের অধীন ছিল, সেখান থেকে তার আজ কীভাবে উন্নত দেশের কাতারে উঠে আসল।

জবাবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু হয়। আমাদের গল্পটা হলো গণতন্ত্র ও উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে এগোনোর গল্প। গণতন্ত্রের অর্থ হলো মানুষের ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতা। আমাদের মুক্ত ও স্বাধীন মানুষেরাই দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমি মনে করি, গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের উন্নয়ন টেকসই না-ও হতে পারে।’ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন ও সুশাসনের এখন সবচেয়ে জরুরি।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন উভয়ই জরুরি বিষয়। উন্নয়ন টেকসই করতে সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন করতে হবে। তবে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শেষ হওয়ার নয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনবিআরের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বিশ্লেষক লিওনার্ডো পাজ নেভেস, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.