খালেদ মাশাল হতে পারেন হামাসের নতুন নেতা

0
62

ইরানের তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর হামাসের রাজনৈতিক শাখার নতুন নেতা কে হতে পারেন– তা নিয়ে চলছে জল্পনা। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটির নতুন শীর্ষ নেতা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন দলটির আরেক নেতা খালেদ মাশাল। তবে খলিল আল-হাইয়ার নামও উঠছে। ফিলিস্তিনের গাজায় তিনি হামাসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে সার্বিক হিসাবনিকাশে খালেদ এগিয়ে আছেন।

ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর জন্য দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হানিয়া সেখানে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তেহরানে খোদ খামেনি ওই জানাজা পড়ান। এতে লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন।

২০১২ সালে গাজা ছাড়ার আগে ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে খালেদ মাশাল (বামে)। ছবি-রয়টার্স

২০১২ সালে গাজা ছাড়ার আগে ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে খালেদ মাশাল (বামে)।

পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশ্লেষক লিসা দফতরি ফক্স নিউজকে বলেন, ‘এটা বিস্ময়ের কিছু নেই যে, ইসলামিক রিপাবলিকের সর্বোচ্চ নেতা হানিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছেন। হানিয়া তাদের অতিথি ছিলেন। তিনি গিয়েছিলেন অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তখনই তাঁকে হত্যা করা হয়। এ দৃষ্টিতে এটা শুধু হানিয়ার ওপরই নয়, ইরানের ওপরও হামলা।’

এ প্রেক্ষাপটে হামাসের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিবিসি লিখেছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল সম্প্রতি তাদের প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে; লেবাননে হিজবুল্লাহ কামান্ডারের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলের বাসিন্দাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ আসছে।

ইসরায়েলের দাবি, গত মাসে গাজা উপত্যকায় চালানো এক বিমান হামলায় হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দাইফ নিহত হয়েছেন। গত ১৩ জুলাই গাজার খান ইউনিসের একটি ভবনে দাইফকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় ৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে হামলা হয়েছে, তার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন এ দাইফ। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন।

তবে দাইফ হত্যার দাবির বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে কোনো নিশ্চয়তা আসেনি। সংগঠনটির এক সদস্য বলেছেন, ইসরায়েলের এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। টেলিগ্রাম বার্তায় হামাস সদস্য ইজ্জত আল-রাশক এ তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার ইসরায়েল গোয়েন্দা মূল্যায়নের ভিত্তিতে এক বিবৃতিতে দাবি করে, তারা নিশ্চিত যে, ‘মোহাম্মদ দাইফকে নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে। গাজায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পরই হামাসের দ্বিতীয় শীর্ষ হিসেবে পরিচিত দাইফ।

চলমান প্রেক্ষাপটে গাজায় অব্যাহতভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সেখানে প্রতিনিয়তই ঘটছে হতাহতের ঘটনা। দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, বৃহস্পতিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আলজাজিরার দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তারা হলেন– প্রতিনিধি ইসমাইল আল-গউল ও আলোকচিত্রী রামি আল-রিফি। একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুও নিহত হয়েছে।

বুধবার ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বা ইউএনএসসি জরুরি সভার আহ্বান করে। তারা দুই পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছে এবং বৃহত্তম যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে তেহরানে হানিয়া হত্যার নিন্দা জানাতে নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.