খাগড়াছড়িতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

0
12
হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।

২০টি মানবাধিকার সংগঠনের এ মোর্চা বলছে, এ ধরনের ঘটনা শুধু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়; বরং ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের জীবন, নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক অধিকার হুমকির মুখে ফেলছে।

আজ বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লেখা এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানায় এইচআরএফবির ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ও সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করার অনুরোধ জানান তাঁরা।

এইচআরএফবি বলছে, তারা মনে করে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বারবার সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। অথচ নিরপেক্ষ তদন্তের অভাবে অপরাধীরা শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে। এটি টেকসই শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

স্মারকলিপিতে সরকারের কাছে আটটি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা; অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা, নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে সহায়তা করা, গত এক বছরে সংঘটিত আরও সাতটি ধর্ষণের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারও বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ থাকলে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের ভয় ও আতঙ্ক দূরীকরণে জরুরি উদ্যোগ নেওয়া, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের মৌলিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার পথনকশা তৈরি করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানবাধিকারের সুরক্ষা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

অতীতে সহিংসতা রোধে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে নীতি প্রণয়ন করার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন এইচআরএফবির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এইচআরএফবির সদস্য ও নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, এইচআরএফবির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সারা হোসেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও এইচআরএফবির সদস্য ইফতেখারুজ্জামান, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী ও এইচআরএফবির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য জাকির হোসেন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ।

স্মারকলিপিতে প্রতিনিধিদলে থাকা ছয়জনসহ স্বাক্ষর করেন এইচআরএফবির বিশেষজ্ঞ হামিদা হোসেন, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাজা দেবাশীষ রায়, এইচআরএফবির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জেড আই খান পান্না, এইচআরএফবির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য রঞ্জন কর্মকার, সঞ্জীব দ্রং, সালেহ আহমদ, এইচআরএফবির সদস্য ফওজিয়া মোসলেম, শামসুল হুদা, সরদার জাহাঙ্গীর হোসেন, শিপন কুমার রবিদাস, সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, দেওয়ান জামান, পল্লব চাকমা, রোকেয়া রফিক, গীতা দাস, আবদুস সাত্তার ও আশরাফুন্নাহার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.