১৯৯১ সালে নাম লেখান ঢাকাই চলচ্চিত্রে; রাজধানী, প্রেম প্রতিশোধ, খায়রুন সুন্দরী, একাত্তরের মা জননী, জীবনঢুলীসহ সাড়ে তিন দশকের ক্যারিয়ারে ৬৫০টি সিনেমায় কাজ করেছেন জামিল। সিনেমার কাজ কমতে থাকায় দেড় যুগ আগে রাজধানী ছেড়েছেন এ অভিনয়শিল্পী। এখন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার আলগীরচর গ্রামে থাকেন আশি–নব্বই দশকের চলচ্চিত্রের এই চেনা মুখ।
এফডিসিতেও খুব একটা আসেন না, গত বছরের জানুয়ারিতে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে শেষবারের মতো এসেছিলেন, প্রায় বছরখানেক পর গত সপ্তাহে আবার আসেন জামিল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সামনে পাতা চেয়ারে বসে পরিচালক শিল্পী চক্রবর্তীর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করতেই একগাল হেসে বললেন, ‘আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি। কাজকর্ম নেই, খাইদাই আর ঘুমাই। এত দিন বই পড়তে পারতাম, মাসখানেক ধরে ঠিকমতো দেখতে পাই না। দুই চোখেই ছানি পড়েছে। আর পায়ে একটু সমস্যা রয়েছে, লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটতে হয়।’
মাঝখানে অসুস্থ হয়ে বিছানাবন্দী ছিলেন, হাসপাতালেও থাকতে হয়েছিল কয়েক সপ্তাহ। আক্ষেপ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন চলচ্চিত্রে কাজ করেছি, এখানে কেউ কারও নয়। কেউ ফোন করে না। কেউ জিজ্ঞাসাও করে না, বেঁচে আছি নাকি মারা গেছি। তবে আলমগীর ফোন করেছেন; চিকিৎসার জন্য অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’
চলচ্চিত্রে পার্শ্বশিল্পী হিসেবেই একটা জীবন কাটিয়ে দিলেন, কখনো নায়ক হতে ইচ্ছা করেনি? জামিলুর রহমান বলেন, ‘মঞ্চে নায়কের চরিত্র করেছি। টিভিতে সিঁড়িঘর নামে একটি নাটকে প্রধান চরিত্র করেছিলাম। যোগ্যতার অভাবে পরে আর উঠতে পারিনি। ‘শেষ কবে অভিনয় করেছেন?’ কড়ে আঙুল গুনেও বের করতে পারলেন না তিনি।
স্মৃতি হাতড়ে এটুকু বললেন, বেশ কয়েক বছর আগে ‘ইত্যাদি’তে অভিনয় করেছিলেন।
৮০ বছর পেরিয়েছেন জামিল, মৃত্যুর আগপর্যন্ত অভিনয় করে যেতে চান তিনি, ‘মানুষ কর্মক্ষম অবস্থায় ঘরে বসে গেলে নানান দুশ্চিন্তা গ্রাস করে।’
‘তাহলে অভিনয়ে আপনাকে দেখা যায় না কেন?’ এ প্রশ্নের উত্তরে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন; বললেন, ‘আমি তো কাজ করতেই চাই। কিন্তু আমাকে কেউ নেয় না।’ না নেওয়ার কারণও জানান, ‘যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা ছবি করছেন না। এখন যাঁরা ছবি করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। তাঁরা আমাকে চেনেনও না। সিনেমা কিংবা নাটক যা–ই হোক, আমি কাজ করতে চাই।’