কোটা আন্দোলনে নাশকতার নির্দেশনা আসে জামায়াতের ‘অবসর’ ভবন থেকে: সিটিটিসি

0
33
‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালায় (সিটিটিসি)

রাজধানীর ধানমন্ডিতে ৫/এ সড়কে দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর অফিস হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসা ‘অবসর’ নামে একটি ভবনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট কাউন্টার টেররিজম ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও সেখান থেকে ১১টি হাতবোমা, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র ও জিহাদি বই উদ্ধার করেছে সংস্থাটি।

সিটিটিসির দাবি, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঘটে যাওয়া নাশকতা, সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল এই অফিস থেকে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটিকে। আর এখান থেকেই তহবিল সংগ্রহ ও সরবারহ করা হতো।

শনিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যার পর ‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালায় (সিটিটিসি)। অভিযান শেষে রাতে ভবনের ভেতরেই সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান।

‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালায় (সিটিটিসি)

তিনি জানান, ছয়তলা ‘অবসর’ ভবনের চার তলার অর্ধেকজুড়ে জসিম উদ্দীন নামে এক আইনজীবী ভাড়া নিয়ে চেম্বার করতেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা। এখান থেকেই গোপনে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকাকেন্দ্রিক সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে যেসব সহিংসতা ঘটে, তাতে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা নেতৃত্ব দেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এই অফিস থেকে সেদিন সহিংসতায় নেতৃত্ব দেওয়ার তথ্য দিয়েছেন শিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম। অভিযানকালে আইনজীবীর ওই চেম্বার থেকে হামবোমা ও অস্ত্র ছাড়াও প্রচুর জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে। তবে জসিম উদ্দীনকে পাওয়া যায়নি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘এর আগে শনিবার বিভিন্ন সময় ঢাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মিজানুর রহমান, জামায়াতের মহানগর কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এখানে অভিযান চালানো হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় যে নারকীয় নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, তার মূল নেতৃত্বে ছিলেন রাশেদুল ইসলাম।’

‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালায় (সিটিটিসি)

জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের গোপন আস্তানার কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় অফিস হিসেবে এ অফিসটি ব্যবহার করা হয়। এ অফিসে অনেক আলামত পেয়েছি। সম্প্রতি নাশকতায় তারা যেসব দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছে, ভাঙচুর, নাশকতা ও পুলিশের ওপর আক্রমণে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলো এখান থেকে উদ্ধার করেছি।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি স্থাপনায় যেসব হামলা হয়েছে, সবকিছু সমন্বয় করা হয়েছে এই অফিস থেকে। বিভিন্ন নাশকতায় যারা অংশ নিয়েছে, এই অফিস থেকেই তাদের তহবিল সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে এ অফিস থেকেই তহবিল সংগ্রহ করা করেছে। এ সংক্রান্ত বিপুল ডকুমেন্টস পাওয়া গেছে। আমাদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে। যারা এসব কাজে সমন্বয়কের ভূমিকায় ছিল, যারা এসব কাজে অর্থ সরবরাহ করেছিল, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’

‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালায় (সিটিটিসি)

সিটিটিসি প্রধান আরও জানান, আন্দোলনে সহিংসতা চালানোর জন্য তহবিল দিয়েছে, এমন বেশ কিছু বড় ডোনারের নাম পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় হামলা করার চেষ্টা হয়েছিল, সেই নির্দেশনাও এই অফিস থেকে হয়েছিল। জঙ্গি স্টাইলে জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম পরিচালিত হতো এ অফিস থেকে। নাম-ঠিকানা গোপন করে এখানে অফিস চলছিল গত পাঁচ বছর ধরে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.