কুমিল্লা শহরতলির শাসনগাছা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে জামিল হাসান ওরফে অনর্ব (৩০) নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে শাসনগাছা রেলওয়ে পদচারী–সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাসনগাছা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও লেগুনা স্ট্যান্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শাসনগাছা মধ্যমপাড়া এলাকার আবুল কাশেম ও শাসনগাছা মোল্লা বাড়ির রাব্বি আলাউদ্দিনের মধ্যে আজ দুপুরে হঠাৎ গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন। এতে জামিল হাসানের বুকে গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাজমুল হাসান ও মো. অনিক নামের দুজনকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে। নিশু নামের আরেকজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নিহত জামিল হাসান শাসনগাছা মধ্যমপাড়ার আজহার উদ্দিনের ছেলে। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। শাসনগাছা বাস টার্মিনালে একটি বাস কাউন্টারে বসতেন তিনি। এ ঘটনায় রাব্বির বাবা খলিল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি আবু তৈয়ব বলেন, জামিল হাসান তাঁর সঙ্গে ছাত্রলীগ করতেন। তিনি ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। মারামারি দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।
এলাকাবাসী জানান, শাসনগাছায় আন্তজেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় একাধিক সিএনজি অটোরিকশার ও লেগুনার অবৈধ স্ট্যান্ড আছে। এগুলো থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি হয়। এসব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আওয়ামী লীগ সমর্থক আবুল কাশেম পক্ষের কাছে একসময় স্ট্যান্ডগুলোর নিয়ন্ত্রণে ছিল। পরে তাঁদের সরিয়ে ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি আলাউদ্দিন দায়িত্ব নেন। এর পর থেকেই দুই পক্ষ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঝামেলায় জড়ায়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, শাসনগাছা বাস টার্মিনাল এলাকার অবৈধ স্ট্যান্ড দখল ও আধিপত্য নিয়ে মোল্লাবাড়ি ও মধ্যমপাড়া এলাকার মধ্যে ঝামেলা হয়। গোলাগুলি হয়। এতে বুকে গুলি লেগে জামিল হাসান মারা যান। আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।