কিউবা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আড়ি পাতছে চীন, দাবি ওয়াশিংটনের

0
126
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকা

কিউবা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীন নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের দাবি, ২০১৯ সালে কিউবায় নজরদারি–সংক্রান্ত সরঞ্জাম ও অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে।

এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার এই দাবি করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায়, বৈদ্যুতিন মাধ্যমে আড়িপাতার জন্য কিউবায় অবকাঠামো নির্মাণে দেশটির সঙ্গে গোপন চুক্তি করেছে চীন। ওই অবকাঠামো নির্মাণের স্থানটি ফ্লোরিডা থেকে মোটামুটি ১০০ কিলোমিটার দূরে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম যেভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরছে, তার সঙ্গে আমাদের বোঝাপোড়া মিলছে না।’ তবে প্রতিবেদনের কোন অংশ অসত্য, তা তিনি যেমন বলেননি, তেমনি কিউবায় আড়িপাড়ার অবকাঠামো নির্মাণে চীনের পদক্ষেপ নিয়েও বিস্তারিত কিছু বলেননি।

বাইডেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তার ভাষ্য, বিষয়টি জো বাইডেন ক্ষমতায় (২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি) আসার আগের; চীন তখন থেকেই বিশ্বব্যাপী তাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দেয়।

এটা (চীনের আড়িপাতা) চলমান বিষয়, এটা নতুন কোনো খবর নয় উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৯ সালে কিউবায় চীন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের সরঞ্জামের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গোয়েন্দা তথ্য আছে।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা গত শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া বিবৃতির কথা উল্লেখ করেন। ওই বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যাকার’ অভিহিত করে দেশটির বিরুদ্ধে ‘গুজব ছড়ানো ও পরনিন্দা করার’ অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে কিউবা সরকার তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রতিবেদনটি প্রকাশের দিনই কিউবার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস ফার্নান্দেজ দে কোসিও একে নাচক করে দেন। প্রতিবেদনটিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ অভিহিত করে তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে কিউবার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করে রাখা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে ন্যায্যতা দিতে এটা তাদের আরেকটি ‘ধাপ্পা’। কিউবার এই মন্ত্রী আরও বলেন, তারা লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে যেকোনো ধরনের বিদেশি সামরিক উপস্থিতির বিরোধী।

গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় ‘চীনের নজরদারি বেলুন’ শনাক্ত ও তা ভূপাতিত করার দাবি করা হয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেই উত্তেজনা নিরসনে দুই পক্ষই সম্প্রতি উদ্যোগী হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১৮ জুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের চীন সফরে যাওয়ার পরিকল্পনার রয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় চীনের আড়ি পাতার অভিযোগ তুলল যুক্তরাষ্ট্র।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.