বড় ধরনের সংস্কারকাজের জন্য কালুরঘাট সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করতে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এই সংস্কারকাজ আগামী সপ্তাহে শুরু হবে। তাই এই সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে ফেরি হয়ে পারাপার হতে হবে। আর আজ শনিবার সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি ব্যবহারের টোল চূড়ান্ত করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। গাড়িভেদে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫৬৫ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফেরির টোল চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি আজ শনিবার নিশ্চিত করেছেন সওজের চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন। তিনি বলেন, ফেরির টোল হার অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন থেকে চাইলে গাড়ি ফেরি দিয়ে কর্ণফুলী নদী পার হতে পারবে। আগামী সপ্তাহে কালুরঘাট রেলসেতুতে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে রেলওয়ে। তখন ফেরি দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হবে।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় কালুরঘাট রেলসেতু। ১৯৬২ সালে যান চলাচল শুরু হয়। সেতুর বর্তমান অবস্থা খারাপ। এর আগে দুবার সংস্কার করা হয়েছে। এখন কক্সবাজারে ভারী ইঞ্জিনের ট্রেন যাবে। তাই কালুরঘাট সেতু সংস্কার করতে হচ্ছে। বর্তমানে এই সেতুতে ট্রেনের গতি ১০ কিলোমিটার। সংস্কারের পর ৫০-৬০ কিলোমিটার হবে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুর সংস্কার করতে যাচ্ছে। এ জন্য গত ১৮ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে রেল। চুক্তি অনুযায়ী ঈদের পর সংস্কারকাজ শুরুর সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু টোল চূড়ান্ত না হওয়ায় ফেরি চলাচল শুরু হয়নি। এখন টোল নির্ধারণ হওয়ায় এই জটিলতা দূর হলো।
সওজের তথ্য অনুযায়ী, কালুরঘাট এলাকায় ফেরি করে কর্ণফুলী নদী পার হতে হলে ট্রেইলারকে প্রতিবার টোল দিতে হবে ৫৬৫ টাকা। ভারী ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানের লাগবে সাড়ে চার শ টাকা, মাঝারি ট্রাকের ২২৫ টাকা, ছোট ট্রাকের ১৭০ টাকা। বড় বাসের (৩১-আসনের বেশি) টোল ২০৫ টাকা, মিনিবাসের ১১৫ টাকা। কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানের (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ টাকা। মাইক্রোবাস, পিকআপের টোল ৯০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ির (প্রাইভেট কার) ৫৫ টাকা, ব্যাটারিচালিত ৩ ও ৪ চাকার গাড়ির জন্য ২৫ টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা ও রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ির টোল দিতে হবে ৫ টাকা করে।
কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত কালুরঘাট রেলসেতু দিয়ে বর্তমানে বড় বাস, ট্রাক-জাতীয় যানবাহন চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বলেন, সওজের টোল নির্ধারণের বিষয়টি তাঁরা অবগত হয়েছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে সংস্কারকাজ শুরু হবে।