কাজ নেই বিসিবির স্থানীয় কোচদের

0
125

জাতীয় দলের সহকারী কোচ নিয়োগে দেশিদের সুযোগ দিতে চেয়েছিল বিসিবি। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথায় আশ্বস্ত হয়ে আবেদন করেছিলেন মিজানুর রহমান বাবুল। তিনি ভালো করেই জানতেন, বিসিবিতে বিদেশি কোচের ভিড়ে স্থানীয়দের জায়গা হবে না। এর পরও দেশি কোচদের প্রতিনিধিত্ব করার সাহস দেখান তিনি।

জাতীয় দল দূরে থাক এইচপি, বাংলাদেশ টাইগার ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলেও বিদেশি কোচের ভিড়ে দেশিদের জায়গা নেই। বয়সভিত্তিক দলেও থাকতে হচ্ছে বিদেশি কোচদের সহকারী হিসেবে। বিসিবির দেশি কোচরা নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছেন।

বাংলাদেশ টাইগার্স, বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কোচ ছিলেন মিজানুর রহমান বাবুল। এইচপির সঙ্গে কাজ করেছেন জাফরুল এহসানরা। এই তিনটি দলে বিদেশি কোচ নিয়োগ দেওয়ায় বাবুলদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। বিসিবির ডেভেলপমেন্ট কোচ হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৫ বা অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে কাজ করতে হবে তাঁদের। সাইফুল ইসলাম, আব্দুল করিম জুয়েলরা কাজ পাবেন কালেভদ্রে। বিসিবির এই সিনিয়র কোচদের জানা নেই অফ সিজনে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে কিনা। কারণ বিদেশি কোচদের সহকারী হতেও সিনিয়রদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে উদীয়মান কোচদের সঙ্গে।

নাজমুল হোসেন, ডলার মাহমুদ, রাজিন সালেহ, তালহা যুবায়ের গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের কোচ। তাঁরাই এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ পাচ্ছেন বিদেশি কোচদের সঙ্গে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজে প্রধান কোচ জেমি সিডন্স কোচিং প্যানেলে নিয়েছেন নাজমুল হোসেন ও রাজিন সালেহকে। এইচপিতে পেস বোলিং কোচ হিসেবে আপাতত কাজ করবেন ডলার মাহমুদ। উদীয়মান কোচরা এটাকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

একজন সিনিয়র কোচ হতাশা নিয়ে বলছিলেন, ‘কোচিং পেশায় এসে ভুল করেছি। ব্যাংকে চাকরি নিলেও ভালো করতাম। এ দেশে লোকাল কোচদের সামনে বাড়ার সব পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। শিগগিরই হয়তো দেখব অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ দলেও বিদেশি কোচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার কোচিং পেশায় ঢুকেছেন। তুষার ইমরান, তারেক আজিজরা ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজ করছেন। লিগে ভালো কাজ করা আফতাব আহমেদ এখন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ক্রিকেট কোচিং করান তিনি। জাতীয় দলের সাবেক কোচ সরওয়ার ইমরান বিসিবি বা বিপিএলে নেই। বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আবু ইমাম মো. কাউসারও অনুধাবন করতে পারছেন দেশি কোচদের কাজের পরিধি কমে যাওয়ার বিষয়ে, ‘এটা সত্য, দেশি কোচদের কাজের পরিধি কমে গেছে বিদেশি কোচ বাড়ায়। তবে এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকরাই ভালো বলতে পারবেন।’

বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিদেশি কোচের ভিড়ে দেশি কোচরা কী করবেন? এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো উত্তর দেননি তিনি।

বিসিবি কোচেস কোর্সের আয়োজন করে দেশে। লেভেল টু, থ্রি কোর্স করা কোচও রয়েছেন দেশে। অথচ বিসিবি থেকে প্রতিভাবান কোনো কোচকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় না। ভারতের পাতিয়ালাতে স্কলারশিপ থাকলেও সেগুলোকে কাজে লাগাতে দেখা যায় না। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশি কোচদের অদক্ষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন বিসিবির নীতিনির্ধারকরা। এভাবে চলতে থাকলে বাবুল, এহসান, সাইফুলদের জাতীয় লিগে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহেরাও সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিসিবিকে বিদেশি কোচের বাজারে পরিণত করবেন স্থায়ীভাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.