নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে দিয়েছেন, কাউকে খুশি করার জন্য বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল এই মন্তব্য করেন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এই বিষয়ে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান সাংবাদিকদের আরও বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে ১০৭ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন—যে ওনাকে (ড. ইউনূস) বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। এর বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে—এমন দাবি করে রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’ কেন স্বাক্ষর করবেন না—এমন প্রশ্নের জবাবে এমরান বলেন, ‘…এটি আমার নিজস্ব চিন্তা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ শতাধিক ব্যক্তি যে বিবৃতি দিয়েছেন, তার সঙ্গে আমি একমত।’
আজ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনাকে (এমরান) সই করতে আমি কখনো বলিনি। আমি কোনো দিন কোনো আইন কর্মকর্তা বা কাউকে সই করতে বলি না। আমাদের অফিস থেকে আমার জানামতে, নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, কোনো বিবৃতি তৈরি করা হয়নি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গতকাল এমরানের ছুটি ছিল। ডিউটি (দায়িত্ব) ছিল না। তিনি এখানে (কার্যালয়) আসেননি। যেখানে নিয়মিত ব্রিফিং করা হয়, তিনি সেখানে যান। গিয়ে কতগুলো কথা বললেন।
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘তিনি (এমরান) কী কারণে করলেন, কোন উদ্দেশ্যে করলেন, আপনারা (সাংবাদিক) খোঁজ নিয়ে দেখেন। কাকে খুশি করার জন্য এ কথাগুলো বললেন, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন।’
এমরান বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে এমন একটি নির্দেশনা (বিবৃতিতে সই) এসেছে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘…উনি (এমরান) কি আমার সঙ্গে কথা বলবেন না? আমার কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে? আমি নিজে করি কোনো হোয়াটসঅ্যাপ? কে কী বলল, উনি এটি বলে দিলেন। আমি তো বললাম, উনার কোনো উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যটা জানেন, পরিষ্কার করেন, আপনারা নিজেরা খোঁজ নেন। নিশ্চিত উনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এটি করেছেন।’
এমরানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমি তো ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নই। আমি তো নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও নই।’
সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘উনি (এমরান) কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এটি করেছেন। শোনেন, আপনার অফিসে যদি কেউ বলে, আপনার বস এটি বলেছে, তাহলে আপনি উনার সঙ্গে কথা বলবেন না? সত্যতা যাচাই করবেন তো! সত্যতা যাচাই না করেই প্রেসের (গণমাধ্যম) কাছে এসে প্রেস কনফারেন্স করে বলে দিলেন।…নিশ্চিতভাবে এখানে কোনো অন্য উদ্দেশ্যে উনি এটি করেছেন। যাঁদের খুশি করার জন্য করেছেন, সে কারণেই করেছেন হয়তো। নিশ্চিত থাকেন, উনি অন্য কারও খুশি করার জন্য এটি করেছেন, এসব বক্তব্য দিয়েছেন।’